হিন্দুস্তান কেবলস কারখানার রূপনারায়ণপুর ইউনিট পরিদর্শন করল প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীন অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের (ওএফবি) চার জনের একটি বিশেষজ্ঞ দল।
এর আগেও এই দলটি কারখানার হায়দরাবাদ ও নৈনি ইউনিট দু’টি দেখেছে। কারখানার বিভিন্ন বিভাগগুলি কী ভাবে কাজে লাগানো হবে, পর্যাপ্ত জল কোথা থেকে কী ভাবে আনানো হবে, পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ কী ভাবে মিলবে, নির্মাণ কাজ করতে প্রাথমিক খরচের পরিমাণ কী দাঁড়াবে, নতুন করে আর কতগুলি কারখানার শেড বানাতে হবে, কোন কোন রাস্তা কী ভাবে ব্যবহার করা হবে— এ সবই বৃহস্পতিবার বিশেষজ্ঞেরা খুঁটিয়ে দেখেন। বানিয়েছেন একটি মানচিত্রও।
বিশেষজ্ঞেরা জানান, লোয়ার কেশিয়ায় কারখানার দ্বিতীয় শেডের তলায় কেমিক্যাল বিভাগ তৈরি হবে। প্রতি দিন উৎপাদন চালানোর জন্য ৯ লক্ষ গ্যালন জল দরকার। এই জল কোথা থেকে আসবে সে ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত হতে চান। কারখানার মূল শেডে বেশ কিছু নির্মাণ কাজ হবে। এর জন্য প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকা।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিআইএফআরের বৈঠকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের পক্ষে কেবলস কারখানাকে অধিগ্রহণের জন্য লিখিত সম্মতি জানিয়েছিল। তার আগেই ভারী শিল্প দফতরকে কারখানা অধিগ্রহণের সম্মতিপত্র পাঠায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সংস্থার রূপনারায়ণপুর ইউনিটের আধিকারিকেরা মনে করছেন, অধিগ্রহণ পরবর্তী প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার শেষ প্রস্তুতি চলছে।
এ দিনের বিশেষজ্ঞ দলে ছিলেন ওএফবি-র চার আধিকারিক শিবানন্দ, দেবব্রত মল্লিক, রাকেশ সাক্সেনা ও গুলশন সিংহ। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রূপনারায়ণপুর ইউনিটের প্রধান বাসুদেব দে এবং জনসংযোগ ও ভূমি আধিকারিক হরিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। সকালে তাঁরা প্রথমে কারখানায় ঢুকে বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। পরে তাঁরা লোয়ার কেশিয়ায় দ্বিতীয় শেডে যান। অজয়ের তীরে সংস্থার পাম্পহাউসও দেখতে যান তাঁরা। বিকেলে তাঁরা যান মাইথন ও সীতাবাড়ি এলাকায়, জলের উৎস দেখতে।
১৯৫২ সালে তৈরি হিন্দুস্থান কেবল্সের এই কারখানায় আগে মূলত টেলিফোনের কেব্ল বানানো হত। ১৯৯৫ সাল থেকেই একটু একটু করে কারখানা রুগ্ণ হতে শুরু করে। ১৯৯৭ সালে তা বিআইএফআরে চলে যায়। ২০০৩ সালে কারখানার ভাগ্য নির্ধারণের দায় গিয়ে পড়ে বিআরপিএসই-এর উপরে। ২০০৪ সাল ও ২০০৭ সালে কারখানার আধুনিকীকরণের জন্য দু’টি খসড়া প্রকল্পের উপর আলোচনা হয়। এত দিন ধরে সংস্থার প্রায় ৯২৩ জন শ্রমিক মাসের পর মাস বেতন পাননি। শেষমেশ রুগ্ণ চাঙ্গা করতে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড এগিয়ে আসায় এলাকার লোকজন স্বস্তিতে।
|