বিরোধ মেটেনি
কোর্টের নির্দেশ মেনে প্রস্তুতি শুরু পঞ্চায়েতের
দালতের লড়াই জিইয়ে থাকলেও হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিল রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মহাকরণ সূত্রের খবর, ভোটের দিন ঠিক করতে আজ, বৃহস্পতিবার কমিশনে যাবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। দু’পক্ষই জানিয়েছে, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রক্রিয়া শেষ করার যে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ দিয়েছে, তা কার্যকর করা হবে।
মঙ্গলবার তাদের নির্দেশে হাইকোর্ট বলেছে, কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে তিন দিনের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা করুক রাজ্য। সেই সময়সীমা শুক্রবার শেষ হচ্ছে। তাই বৃহস্পতিবারের মধ্যেই দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলতে উদ্যোগী দু’পক্ষ। রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র এবং স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উত্তরবঙ্গ গিয়েছিলেন। বুধবার তাঁরা কলকাতা ফেরার ট্রেনে ওঠেন। পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করা নিয়ে দার্জিলিঙেই তাঁদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা নিয়েই তাঁরা বৃহস্পতিবার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
মুখ্যমন্ত্রী দুই প্রশাসনিক কর্তাকে জানিয়েছেন, ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করা নিয়ে অনড় মনোভাব নেবে না রাজ্য। তবে তিনি চান জুলাইয়ের আগেই শেষ হোক ভোটের প্রক্রিয়া। মহাকরণ সূত্রের বক্তব্য, ৯ বা ১০ জুলাই থেকে রমজান মাস শুরু হচ্ছে। তা ছাড়া জুলাইয়ে বর্ষার তীব্রতাও বাড়বে। এই দুই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী জুনের মধ্যেই ভোট করাতে চাইছেন। একই কারণ দেখিয়ে ৩০ জুনের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোট শেষ করার আর্জি জানিয়ে এআইইউডিএফ-এর নেতা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীও রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। কমিশন সূত্রের খবর, ভোটের নির্ঘণ্ট ঠিক করতে তারাও রমজান মাসের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিচার করবে।
তাঁরা যে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ভোট শেষ করাতে বদ্ধপরিকর, তা বোঝাতে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় তাঁর মালদহ সফর বাতিল করে দফতরের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে বলেন, তিন দফায় ভোট করার জন্য জেলার বিভাজন ও দিনক্ষণ নিয়ে দু’টি প্রস্তাব কমিশনের কাছে পেশ করবে রাজ্য। প্রথম দিন জঙ্গলমহল এলাকা-সহ ছ’টি জেলা, দ্বিতীয় দিন দক্ষিণবঙ্গের ছ’টি জেলা এবং শেষ দিন উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জেলায় ভোট করা যেতে পারে। অথবা, জঙ্গলমহলের পাঁচটি জেলায় এক দিনে, দক্ষিণবঙ্গের সাতটি জেলায় এক দিনে এবং উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জেলায় এক দিনে ভোট হতে পারে। কমিশন তার মধ্যে থেকে নির্বাচন-সূচি বেছে নেবে বলে আশা পঞ্চায়েতমন্ত্রীর। মহাকরণ সূত্রের খবর, বাহিনী নিয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ হলে শুক্রবারই পঞ্চায়েত আইনের ৪২ ধারা মেনে নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করবে রাজ্য।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কমিশন আদালতে প্রস্তাব পেশ করে। তাতে বলা হয়, ১৮ মে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হোক। ২৬ জুন, ৩০ জুন এবং ৩ জুলাই হোক ভোট গ্রহণ। ১২ জুলাই ভোট গণনার প্রস্তাব করেছিল কমিশন। রাজ্য আরও আগে ভোটের পক্ষপাতী। পঞ্চায়েত দফতরের বক্তব্য, গত বার অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতের গঠন-প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২৮ জুন থেকে। ফলে জুনের মধ্যে ভোট মিটলে প্রশাসক বসানোর প্রয়োজন হবে না।
স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করা নিয়ে টানাপোড়েন এ দিনও অব্যাহত ছিল। আদালতের কাছে কমিশন স্পর্শকাতর বুথের যে পরিসংখ্যান পেশ করেছে, তাই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “জেলায় কত বুথ স্পর্শকাতর, তা রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করতে হবে কমিশনকে।” সুব্রতবাবুর এই বক্তব্যে নতুন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে কমিশনে। তারা মনে করছে, স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা কমিয়ে দেখাতে পারে সরকার। কমিশন মনে করে, স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করার অধিকার তাদেরই। কমিশন তাই বৃহস্পতিবারের বৈঠকেই এই নিয়ে সরকারের বক্তব্য জেনে নিতে চায়।
কমিশনের সচিব তাপস রায় বলেন, “আমরা ৮০০ কোম্পানি বাহিনীর দাবি থেকে সরছি না। ২০০৮ সালের পুলিশ রোস্টার ধরলেও দেখা যাচ্ছে, সে বছর প্রয়োজনের তুলনায় ৫৬ হাজার পুলিশ কম ছিল। এ বার বুথ ও কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়েছে। তাই বাহিনীও বেশি লাগবে।” মনোনয়পত্র জমা দেওয়ার আগে ৩০০ কোম্পানি সশস্ত্র বাহিনীর দাবিতেও তারা অনড়। সচিবের কথায়, “আদালতের নির্দেশ মেনেই যতটা সম্ভব অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার চেষ্টা করবে কমিশন।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.