রাম সিংহের পর এ বার বিনয় শর্মা। তিহাড় জেলেই অন্য বন্দিদের রোষের শিকার হলেন দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের আরও এক অভিযুক্ত। বুকে আঘাত নিয়ে গত ৪ মে বিনয়কে তিহাড় জেল সংলগ্ন দীনদয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিনয়ের চিকিৎসায় গাফিলতি হচ্ছে, তাকে ঠিকঠাক ওষুধপত্র দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগে চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হন বিনয়ের আইনজীবী এ পি সিংহ।
সেই মামলাতেই অতিরিক্ত দায়রা বিচারক যোগেশ খন্না রায় দেন, বিনয়ের চিকিৎসায় গাফিলতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়। দীনদয়াল হাসপাতালের চিকিৎসকরা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন, যার জেরেই ওই হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত। প্রয়োজনে বিনয়কে অন্য কোনও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হোক বলে জেল কর্তৃপক্ষকে আদেশও দেন তিন।
বিচারকের নির্দেশ মতোই বুধবার দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের ওই অভিযুক্তকে লোকনায়ক জয় প্রকাশ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে কিছু না জানানো হলেও বিনয়ের আইনজীবী দাবি করেন, তাঁর মক্কেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিনয়ের রক্তবমি হচ্ছে, গায়ে ধুম জ্বর। তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে আইনজীবী এ পি সিংহ এও বলেন, জেল চত্বরেই বিনয়কে মেরে ফেলার ছক কষেছিল অন্য বন্দিরা। বেশ কিছু দিন ধরেই তাকে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছিল। সম্প্রতি বিনয়ের হাতও ভেঙে দেওয়া হয়। জেল কর্তৃপক্ষের মদতে অন্য বন্দিরা বিনয়ের খাবারে বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল। যার জেরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে বিনয়। এই প্রসঙ্গে এ পি সিংহ জানান, গত ৮ মে থেকে অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজিরা দিতে পারছে না বিনয়। সে কারণেই আদালতের কাছে বিনয়ের ১৫ দিনের অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদনও জানিয়েছিলেন তিনি। তবে গত কাল তা খারিজ হয়ে যায়।
মাস দু’য়েক আগের ঘটনা। ৩ নং তিহাড় জেলের একটি সেল থেকে উদ্ধার হয় দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত রাম সিংহের দেহ। জেল কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয় রাম আত্মহত্যা করেছে। তবে রাম সিংহের পরিবার তা মেনে নেয়নি। তাঁরা দাবি করেন, রামকে খুন করা হয়েছে। রামের বাবা ও ভাই জানান, রামের মৃতদেহে প্রচুর আঘাতের চিহ্ন ছিল।
রাম সিংহের মৃত্যুর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই জেল চত্বরে বিনয় শর্মাকে আক্রমণের ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে তিহাড় জেলে বন্দিদের সুরক্ষা।
|