|
|
|
|
রাজ্যসভা নির্বাচন |
অসম থেকে মনোনয়ন জমা দিলেন প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
একের পর এক আর্থিক কেলেঙ্কারি জর্জরিত তাঁর মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন, অধ্যাপক মনমোহন, বিশ্বব্যাঙ্কের একদা আর্থিক উপদেষ্টা মনমোহন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর মনমোহন সিংহের সারা জীবনের নিজস্ব আয় ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট হয়েই আছে। তার সুদই প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব আয়। ফলে তাঁর দিকে আঙুল তোলা দূরে থাক, বহু সদ্য বিধায়কও তাঁর আয়ের রির্টান দেখে লজ্জায় পড়েছেন।
আজ পঞ্চমবারের জন্য অসম থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিলেন মনমোহন সিংহ। সঙ্গে রিটার্ন। তাঁর জমা দেওয়া সম্পত্তির হলফনামা বলছে, স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে মোট ১১ কোটি ৬০ লক্ষ ৪১ হাজার টাকার মালিক তিনি। সরকারি বিএমডব্লিউ-র আরোহী ১৯৯৬ সালে কেনা তাঁর মারুতি ৮০০ গাড়িটির মায়া এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি। আর পর পর ছ’টি অক্ষয় তৃতীয়া, ধনতরাস পার করার পরেও স্ত্রীর মনোরঞ্জনে প্রধানমন্ত্রী গত বারের চেয়ে এক গ্রাম বেশি সোনাও গুরশরণ কউরকে কিনে দেননি। |
পঞ্চম রাজ্যসভা নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
রয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দিগ্বিজয় সিংহ,
সাংসদ
ভুবনেশ্বর কলিতা প্রমুখ। বুধবার, গুয়াহাটিতে। ছবি: উজ্জ্বল দেব। |
প্রধানমন্ত্রী যে হলফনামা দেন সেই অনুযায়ী, হাতে নগদ বলতে প্রধানমন্ত্রীর কিছু নেই। গত বার ছিল ১০ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে ব্যাঙ্কে তাঁর স্থায়ী আমানত ছিল ২,৪৪,৪৬,৯৮৬। ২০১১-য় সেই পরিমাণ সুদে বেড়ে হয়েছে ৩,৪৩,৪৩,০৭২ টাকা। সবই স্টেট ব্যাঙ্কের ঘরে জমা। দিসপুরের সচিবালয় থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বের সরুমটোরিয়া ‘গ্রাম’-এ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হিতেশ্বর শইকিয়া ও তাঁর স্ত্রী হেমপ্রভা শইকিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকা প্রধানমন্ত্রীর স্থানীয় স্টেট ব্যাঙ্কের শাখায় রয়েছে ১৮,৬৬৬। স্ত্রী গুরশরণ কউরের কাছে গত বার ছিল ১৫০.৮ গ্রাম সোনার গয়না। সেই পরিমাণ একটুও বাড়েনি। স্ত্রীর হাতে ২০ হাজার টাকা ও ব্যাঙ্কে ১৬,৬২,৫৭০ টাকা রয়েছে। চণ্ডীগড়ের দোতলা বাড়ি ও দিল্লির বসন্তকুঞ্জের বাড়ির মিলিত বাজারদর এখন ৭ কোটি ৫২ লক্ষ ৫০ হাজার।
প্রধানমন্ত্রীর কোনও আয়কর বকেয়া নেই। প্যান কার্ড অনুযায়ী তাঁর বার্ষিক আয় ৪০ লক্ষ ৫১ হাজার ৯৬৪ টাকা। সব মিলিয়ে গত ছ’বছরে তাঁর সম্পদ বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। অর্থাৎ বছরে বৃদ্ধি ৯.৫ শতাংশ। আয়কর বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা যে কোনও আমানত বা সম্পদের সাধারণ স্বাভাবিক বৃদ্ধি। উনি তো আবার ‘সিনিয়র সিটিজেন’।
আজ, ১১টা নাগাদ গুয়াহাটি আসেন মনমোহন। সেখান থেকে সোজা আসেন বিধানসভায়। পথে আসু বিক্ষোভ দেখায়। বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি, আম আদমি পার্টিও। তবে কনভয়ের গতিরোধ হয়নি। সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রীর ধারে-কাছে ঘেঁষতে না দেওয়ার ফরমানকে কেন্দ্র করে ততক্ষণে বিধানসভার প্রবেশ পথে সাংবাদিকদের নজিরবিহীন বিক্ষোভ চলছে। সাংবাদিকদের বিক্ষোভ দেখে প্রধানমন্ত্রী এসপিজির বাধা ঠেলে এগিয়ে আসেন প্রবেশ পথের সামনে। তবে প্রধানমন্ত্রী ভিতরে আহ্বান জানালেও সাংবাদিকরা সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন। তাই সেখানে দাঁড়িয়েই তিনি বলেন, “২২ বছর ধরে অসমের হয়ে কাজ করছি। এখানকার উন্নতির জন্য যা করার করে চলব।”
|
|
|
২০০৮ |
২০১৩ |
মনমোহনের হাতে নগদ |
১০০০০ |
০ |
স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট |
৩,৬৫,৪৯৮ |
১৬,৬২,৫৭০ |
স্ত্রীর হাতে নগদ |
২৫০০০ |
২০০০০ |
দু’টি বাড়ির মূল্যায়ন |
৪,৫০,০০,০০০ |
৭,৫২,৫০,০০০ |
স্থায়ী আমানত, বন্ড ও এনএসএস |
২,৪৪,৪৬,৯৮৬ |
৩,৪৩,৪৩,০৭২ |
* গাড়ি ও গয়না একই |
|
পুরনো খবর: অসম থেকেই পঞ্চম বার রাজ্যসভায় যাবেন মনমোহন |
|
|
|
|
|