রাজ্য জুড়ে লগ্নি সংস্থার এজেন্টদের অপমৃত্যু চলছেই। ধরপাকড়ও চলছে। মঙ্গলবার ফের অস্বাভাবিক মৃত্যু হল রোজ ভ্যালীর এক এজেন্টের। নাম সুফল ধাড়া (২৮)। বাড়ি নদিয়ার শান্তিপুরে বাগ আছড়া এলাকায়। সোমবার বাড়ি ফেরেননি তিনি। পরের দিন আমবাগানে তাঁর ঝুলন্ত দেহ মেলে।
মৃতের পরিবার জানিয়েছে, বছর তিনেক আগে সুফল রোজ ভ্যালীর এজেন্ট হন। কয়েক লক্ষ টাকাও তোলেন। সারদা-কাণ্ডের পরে রোজ ভ্যালীর ভবিষ্যৎ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে উদ্বিগ্ন ছিলেন। টাকা ফেরত চেয়ে আমানতকারীরা চাপ দিচ্ছিলেন। পুলিশের অনুমান, মানসিক চাপেই সুফল আত্মঘাতী হয়েছেন। সারদা-কাণ্ডের পরে এই নিয়ে অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ১৪ জনের অপমৃত্যু হল।
সুফলের দুই ছেলে রয়েছে। স্ত্রী হৃদ্রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসার খরচ জোগাতে ২০ হাজার টাকায় নিজের মোটরবাইক বন্ধক রাখেন। সুফলের বাবা রঘুনাথবাবুর কয়েক বিঘে জমি, আমবাগান আছে। তিনি বলেন, “রোজ ভ্যালীর ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকত ছেলে। মুদিখানার দোকান করতে আমার কাছে টাকাও চায়। জমি বেচে টাকা দিতে চেয়েছিলাম। তার আগেই সব শেষ।” রোজ ভ্যালীর শান্তিপুর শাখার ম্যানেজার গোপাল অধিকারীর দাবি, “মেয়াদ শেষের আগেই আমরা আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিচ্ছি। তাই ওঁর উপর চাপ থাকার কথা নয়। যত দূর জানি, ওই যুবক আরও দু’টি লগ্নি সংস্থার এজেন্ট ছিলেন। তাদের আমানতকারীদের চাপ থাকতে পারে।” যদিও সুফল অন্য কোনও লগ্নি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলেই দাবি তাঁর পরিবার।
প্রতারণার অভিযোগে বাঁকুড়ার তালড্যাংরায় ‘বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড প্রজেক্ট লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভজহরি ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বারাসতেও গ্রেফতার হয়েছেন লগ্নি সংস্থার এক কর্তা। মহম্মদ ওবাইদুল্লা ইসলাম নামে ওই ব্যক্তি ‘সম্প্রীতি প্রজেক্টস লিমিটেড’ নামে একটি লগ্নি সংস্থার এমডি। পুলিশ জানিয়েছে, সংস্থাটি পাঁচ মাস ধরে কর্মীদের বেতন, গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছিল না। ওবাইদুল্লা জামিন পেয়েছেন।
সারদার নবদ্বীপ শাখায় তল্লাশি চালিয়ে এ দিন তিনটি কম্পিউটার ও প্রচুর নথি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। ২৫ এপ্রিল অফিসটি সিল করে দেওয়া হয়। ৯ মে দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থেকে মানস ভট্টাচার্য নামে এক ডেভেলপমেন্ট অফিসারকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার তাঁকে নিয়েই শাখা অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। কয়েক জন আমানতকারীও সঙ্গে ছিলেন।
|