লগ্নি সংস্থার বিপর্যয়ে বাড়ছে মৃত্যু-মিছিল
গ্নি সংস্থার আর্থিক কেলেঙ্কারির চাপ কাড়ছে একের পরে এক জীবন। আত্মঘাতীদের মধ্যে যেমন সারদার এজেন্ট-আমানতকারীরা আছেন, রয়েছেন অন্য লগ্নি সংস্থার এজেন্ট, এজেন্টের আত্মীয়, আমানতকারী, এমনকী মালিকও। তালিকায় শেষ সংযোজন বসিরহাটের হরিশপুরে এক লগ্নি সংস্থার এজেন্ট উজ্জ্বল সমাদ্দার (২৬)। ইতিমধ্যেই রাজ্যে এমন ১৩ জনের অপমৃত্যু হয়েছে। আরও দু’টি আত্মহত্যার ঘটনায় জড়িয়েছে লগ্নি সংস্থার
উজ্জ্বল সমাদ্দার
প্রসঙ্গ। আত্মহত্যার চেষ্টা করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লাটাগুড়ির বাসিন্দা দশম শ্রেণির এক ছাত্র। সারদায় সে ৫০ হাজার টাকা রেখেছিল বলে পরিবারের দাবি।
হরিশপুরের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা উজ্জ্বল তিন বছর ধরে কাজ করতেন ‘সান মাগর্’ নামে এক লগ্নি সংস্থায়। এলাকায় ভাল ছেলে হিসাবে পরিচিতি থাকায় উজ্জ্বলের মারফত অনেকে ওই লগ্নি সংস্থায় টাকা রেখেছিলেন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, তিন মাস ধরে ওই সংস্থার বেশ কিছু আমানতকারী মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও টাকা পাচ্ছিলেন না। তাঁদের একাংশ টাকার দাবিতে নানা ভাবে উজ্জ্বলকে চেপে ধরেছিলেন। রাস্তাঘাটে অপমান করার পাশাপাশি তাঁকে হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার দুপুরে উজ্জ্বল এলাকায় একটি বাড়িতে নিমন্ত্রণে গিয়েছিলেন। কয়েকজন আমানতকারী সেখানে টাকা চেয়ে তাঁকে অপমান করেন। বিকেলে এক বোনের বাড়ি থেকে ফেরার সময় ফের তাঁকে অপদস্থ করে, মোটরবাইক কেড়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ২০-২৫ জন আমানতকারীকে সোমবার সকালে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বাড়ি ফিরে শুয়ে পড়েন উজ্জ্বল। দশ মাস আগে বিয়ে করেছিলেন তিনি। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মনিকাদেবী বলেন, “রাত ১১টা নাগাদ একটা শব্দ পেয়ে ঘুম ভেঙে যায়। দেখি, ঠাকুরঘরে সিলিং ফ্যানের
সঙ্গে স্বামীর গলায় দড়ি বাঁধা। হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচাতে পারলাম না!” পরিবারের দাবি, মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে যুবকটি আত্মঘাতী হন।
পরিবার সূত্রের খবর, সারদার ভরাডুবির পর থেকে মনমরা থাকত লাটাগুড়ির ছাত্রটিও। বাবা মাঝারি মাপের ঠিকাদার। মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবার। বাড়ি থেকে নিয়মিত হাতখরচের টাকা পেলেও বছর ষোলোর ছেলেটি নিজের উৎসাহে অবসর সময়ে ট্রাকের খালাসি, গাড়ির টাইম কিপার এবং একটি অফিসে নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করত। সব মিলিয়ে মাসে প্রায় ৪ হাজার টাকা আয় ছিল তার।
শুক্রবার জানাজানি হয়, সে সারদায় টাকা রেখেছিল।
তার দাদা বলেন, “সারদায় টাকা রাখার জন্য ভাইকে বকাঝকা করা হয়। তা বলে ও বিষ খাবে ভাবিনি। টাকা চাই না। ভাই সুস্থ হলেই যথেষ্ট।” ছাত্রটি অবশ্য সারদা-প্রসঙ্গ উল্লেখ না করে পুলিশকে জানিয়েছে, এক অভিভাবকের বকুনিতে অভিমানী হয়ে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
পুলিশ জানিয়েছে, ৫০ হাজার টাকা ছাত্রটি কী ভাবে পেল, তা দেখা হচ্ছে। যে এজেন্টের মাধ্যমে সে টাকা জমা রেখেছিল, তারও খোঁজ চলছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.