হাওড়া উপ নির্বাচন
মমতাকে বার্তার জল্পনা, সরেই গেল বিজেপি
ড়াইয়ের জন্য কোমর বেঁধেও শেষ পর্যন্ত হাওড়া লোকসভার উপনির্বাচন থেকে সরেই দাঁড়াল বিজেপি। ওই কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি অসীম ঘোষের মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু এ দিন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ ঘোষণা করেন, “আমরা হাওড়ায় লড়াই থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।” বস্তুত, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশেই এই পিছিয়ে আসা। লড়াই ছেড়ে দিয়ে সাধারণ নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এনডিএ-তে আমন্ত্রণের বার্তা দেওয়া হল বলেই মনে করছেন বিজেপির একাংশ।
এর আগে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী দেয়নি। বিজেপি সেখানে লড়ে ১০%-এর বেশি ভোট পায়। এ বার হাওড়ায় তৃণমূল লড়লেও সরে দাঁড়াল বিজেপি। এই ঘটনাপ্রবাহে তৃণমূল-বিজেপি সমঝোতার ইঙ্গিত পেয়ে সরব হয়েছেন অন্যরা। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের বক্তব্য, “বিজেপি অনেক বার্তা দিচ্ছে। উনিও (মমতা) বার্তা দিচ্ছেন। লোকসভা নির্বাচনের পরে বোঝা যাবে এই সব বার্তার অর্থ কী।” মানস ভুঁইয়ার কথায়, “জঙ্গিপুর লোকে দেখেছে। হাওড়াও দেখছে!” হাওড়ায় প্রচারের জন্য দলের সব বিধায়ককে রাস্তায় নামানোর সিদ্ধান্তও এ দিন নিয়েছে কংগ্রেস।
রাহুলবাবু জানান, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহ তাঁদের বলেছেন, দ্রুত লোকসভা ভোট হতে পারে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি চলছে। এই সময়ে কোনও উপনির্বাচনে লড়তে গেলে এই প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের জন্যও মনোযোগ, অর্থ ও লোকবল দরকার। এই দুই কারণেই দল হাওড়া লোকসভার উপনির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রাজ্য বিজেপি-র একাংশ ওই সিদ্ধান্তে লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল নেত্রীর জন্য দরজা খোলা রাখার বার্তা দেখছে এবং তা দলের পক্ষে লাভজনক বলে মনে করছে না। যদিও রাহুল সিংহ বলেন, “রাজনাথজির সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তৃণমূলের প্রতি কোনও বার্তা নেই।” ১৯৯৮ সালে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আপত্তি উড়িয়ে মেদিনীপুরের একটি লোকসভা আসনে লড়েছিল বিজেপি। তখনকার রাজ্য সভাপতি তপন সিকদার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, শেষ মুহূর্তে লড়াই থেকে সরে দাঁড়ালে রাজ্যের কর্মীদের অসম্মান করা হবে। এ ক্ষেত্রেও রাজ্য নেতৃত্ব কেন সেই পথে হাঁটলেন না, সে প্রশ্ন রয়েছে দলের অন্দরেই। হাওড়ায় দলের ভোটারদের কাকে ভোট দিতে বলা হবে? রাহুলবাবু বলেন, “মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা পেরোনোর পরেই এ বিষয়ে যা বলার বলব।”
বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও অবশ্য মমতাকে খুশি করার কোনও বার্তা দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে অস্বীকার করছেন। বিজেপি সূত্রেই জানা গিয়েছে, তৃণমূলের এক ভিন্রাজ্যের সাংসদ এ দিন বিজেপির সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করে হাওড়ায় প্রার্থী প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন। তার পরে বিষয়টি নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের চার নেতার মধ্যে বেশ কয়েক দফা আলোচনা হয়। দু’পক্ষের বোঝাপড়ার পরেই রাহুল সিংহের কাছে নির্দেশ দেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, হাওড়ার লড়াই থেকে সরে দাঁড়াও। দলের এক সর্বভারতীয় নেতার কথায়, “লোকসভার পরে ক্ষমতা দখলের পরিস্থিতি এলে মমতা-সহ এনডিএ-র সব পুরনো সঙ্গীকেই আমরা সঙ্গে চাই। লোকসভার পর মমতা সঙ্গে আসবেন কি না, তা অনেক বিষয়ের উপরে নির্ভরশীল। একটি আসনে প্রার্থী না-দিলেই মমতা হইহই করে এনডিএ-তে যোগ দেবেন, এমনটা ভাবা ঠিক নয়। বরং, হারা আসনে লড়ে শক্তি ও অর্থ অপচয় করা অর্থহীন।” বিরোধীদের অবশ্য পাল্টা প্রশ্ন, জঙ্গিপুর কি জেতা আসন ছিল?
এই পরিস্থিতিতে বিধানসভায় এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে পরিষদীয় দলের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, রবিবার হাওড়ায় ৪০ জন বিধায়ককে নিয়েই পদযাত্রা হবে। তার পরে বিধায়কেরা দু’দলে ভাগ হয়ে সাঁকরাইল ও পাঁচলায় দু’টি নির্বাচনী সভায় যোগ দেবেন। দলের দুই বিধায়ক অসিত মিত্র ও অসিত মালকে হাওড়ার কর্মসূচি সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.