সুপ্রিম কোর্টের সোমবারের একটি নির্দেশে মেডিক্যালের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রবেশিকা পরীক্ষার ফল নিয়ে সমস্যা মিটেছে। কিন্তু একই দিনে জানা গেল, পশ্চিমবঙ্গের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফলপ্রকাশ ও কাউন্সেলিং এ বার অন্যান্য বছরের থেকে দেরিতে হবে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান ভাস্কর গুপ্ত এ দিন জানান, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য দেশ জুড়ে যে-প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়েছে, সেই ‘জয়েন্ট মেন’-এর ফলপ্রকাশ ও কাউন্সেলিংয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে তাঁদেরও গোটা প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাচ্ছে।
যদিও পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্টের ফল তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে বলে বোর্ড সূত্রের খবর। চেয়ারম্যান জানান, জয়েন্ট মেন-এ মেধা-তালিকা বা পরীক্ষার্থীদের র্যাঙ্ক তৈরির ক্ষেত্রে ৬০% গুরুত্ব পায় ওই পরীক্ষার নম্বর এবং ৪০% গুরুত্ব থাকে উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল পরীক্ষার উপরে। জয়েন্ট মেনের ফল প্রকাশিত হলেও মেধা-তালিকা তৈরি করা যায়নি। কারণ উচ্চ মাধ্যমিক, আইএসসি, সিবিএসই-র মতো দ্বাদশ শ্রেণির বিভিন্ন পরীক্ষার ফল এখনও বেরোয়নি। শুধু ফল বেরোলেই হবে না। এক-একটি পরীক্ষার মোট নম্বর এক-এক রকম। তাদের মূল্যায়ন পদ্ধতিতেও কিছু ফারাক রয়েছে। সেই সব দিক বিচার করে তবেই জয়েন্ট মেনের মেধা-তালিকা তৈরি হবে। তাতে যথেষ্ট সময়ও লাগবে।
পশ্চিমবঙ্গের জয়েন্টে বসেছেন প্রায় এক লক্ষ ২০ হাজার ছেলেমেয়ে। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৭০ হাজার জয়েন্ট মেন পরীক্ষাও দিয়েছেন। ভাস্করবাবু বলেন, “এমনটা হতেই পারে, কোনও ছাত্র পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্টের তুলনায় জয়েন্ট মেন-এ ভাল ফল করল। ওই পরীক্ষার্থী অপেক্ষাকৃত ভাল প্রতিষ্ঠানে বা তার পছন্দের বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে। আমরা আগে কাউন্সেলিং করে দিলে সে ওই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারে।” তাই ওই পরীক্ষার মেধা-তালিকা প্রকাশিত না-হলে কাউন্সেলিং শুরু করা হবে না।
সাধারণত জয়েন্টের ফল বেরোয় মে মাসে। গত বছর ফল বেরিয়েছিল ১৭ মে। কাউন্সেলিং শুরু হয়েছিল ১১ জুন। এ বারেও মে-তে ফল বেরোবে বলে জানিয়েছিল বোর্ড। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্টের ফল বেরোলেও জয়েন্ট মেন-এর ফল বেরোনোর আগে কাউন্সেলিং শুরু করা যাবে না। ছাত্রছাত্রীদের যাতে এত দীর্ঘ অপেক্ষা করতে না-হয়, সেই জন্যই মে-র বদলে জুনের প্রথম সপ্তাহে তাঁরা ফল প্রকাশ করবেন বলে ভাস্করবাবু জানান। তাঁর আশ্বাস, তার আগেই মডেল উত্তর ও ছাত্রছাত্রীদের উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট বোর্ডের ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়া হবে। যদিও তাতে ছাত্রছাত্রীদের কতটা উপকার হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ, জয়েন্টের মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় র্যাঙ্কটাই আসল।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির কাউন্সেলিং ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করতে হবে বলে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। ক্লাস শুরু হয় অগস্টে। মেধা-তালিকা প্রকাশ, কাউন্সেলিং দেরিতে শুরু হলে ক্লাসও দেরিতে হতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা। এর জেরে সাধারণ ডিগ্রি কলেজেরও অনেক আসন ফাঁকা থাকতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ।
|