|
|
|
|
|
প্রশ্নপত্র কম, জয়েন্টেও হয়রানি পরীক্ষার্থীদের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
কোনও দোষ ছিল না তাঁদের। তবু প্রশ্নপত্র কম পড়ে যাওয়ায় ভুগতে হল জয়েন্ট এন্ট্রান্সের কিছু পরীক্ষার্থীকে। রবিবার রাজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা ছিল। সকালেই পরীক্ষার্থীর তুলনায় অঙ্কের প্রশ্নপত্র কম আসায় উত্তর ২৪ পরগনার পলতা শান্তিনগর বয়েজ হাইস্কুল কেন্দ্রে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। পরিস্থিতির সামাল দিতে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের দফতর থেকে আরও প্রশ্নপত্র আনানোর ব্যবস্থা হয়।
শেষ পর্যন্ত সকলেই পরীক্ষা দিতে পারলেও কার ভুলে এই বিভ্রাট, কিছু পরীক্ষার্থীকে কেন অকারণে ভুগতে হল, কেনই বা তাঁরা দু’টি বিষয়ের পরীক্ষার মাঝখানে প্রাপ্য বিরতির সময়টুকু পুরোপুরি পেলেন না, তার সদুত্তর মেলেনি। বোর্ডের চেয়ারম্যান ভাস্কর গুপ্ত শুধু জানান, তাঁর সংস্থার কারও গাফিলতি ছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
মেডিক্যালে দেশ জুড়ে অভিন্ন প্রবেশিকার মাধ্যমে ভর্তি শুরু হওয়ায় এ বার রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স ছিল শুধু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক লক্ষ ২০ হাজার। পরীক্ষা তিনটি বিষয় অর্থাৎ অঙ্ক, পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের। এ দিন সকাল সাড়ে ৯টায় অঙ্কের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পলতার ওই কেন্দ্রে প্রার্থীর তুলনায় ৮৩টি কম প্রশ্নপত্র পৌঁছয়। ওই স্কুলে মোট ৩৮০ জন প্রার্থীর আসন পড়েছিল। কিন্তু প্রশ্নপত্র খোলার পরে দেখা যায়, ৮৩টি প্রশ্নপত্র কম পড়েছে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তড়িঘড়ি খবর পাঠানো হয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের দফতরে।
৮৩ জন পরীক্ষার্থীকে আলাদা ঘরে বসিয়ে রেখে অন্যদের পরীক্ষা শুরু করে দেওয়া হয়। পরে বোর্ড থেকে আরও প্রশ্নপত্র এলে নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা পরে পরীক্ষায় বসানো হয় ওই ৮৩ জনকে। প্রথম পরীক্ষাটি ১০০ নম্বরের, সময় দু’ঘণ্টা। অন্যদের অঙ্কের পরীক্ষা সাড়ে ১১টায় শেষ হয়ে গেলেও ৮৩ জনের পরীক্ষা শেষ হয় সাড়ে ১২টায়। বোর্ড সূত্রের খবর, প্রথম এবং দ্বিতীয় পরীক্ষার মাঝখানে এক ঘণ্টার বিরতি থাকে। দ্বিতীয় পর্বে অন্যদের পদার্থবিদ্যার পরীক্ষা সাড়ে ১২টাতেই শুরু হয়ে যায়। কিন্তু ওই ৮৩ জন সেই সবে অঙ্কের পরীক্ষা শেষ করেছেন। তাঁদের বিরতির সময় কমিয়ে আধ ঘণ্টা করা হয় এবং জানানো হয়, তাঁদের পদার্থবিদ্যার পরীক্ষা সাড়ে ১২টার বদলে ১টায় শুরু হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বের পরীক্ষা প্রতিটিই ৭৫ নম্বরের এবং প্রতিটিরই সময় দেড় ঘণ্টা। মাঝখানে বিরতি এক ঘণ্টার। কিন্তু ওই ৮৩ জনের দ্বিতীয় পর্বের পরীক্ষা ২টোর বদলে আড়াইটেয় শেষ হওয়ায় তাঁদের ক্ষেত্রে পদার্থবিদ্যা এবং রসায়নের পরীক্ষার মাঝখানের বিরতিও কমে আধ ঘণ্টা হয়ে যায়। বিরতিতে পরের পরীক্ষার জন্য বইয়ের পাতায় শেষ মুহূর্তের চোখ বোলানোর সময় কমে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তাঁদের অনেকেই।
বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা আগে শুরু হয়ে যাওয়ায় অন্য প্রার্থীদের কাছে প্রশ্ন ফাঁসের আশঙ্কা ছিল। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বোর্ড-প্রধান বলেন, “প্রশ্নপত্র কম পড়ায় ৮৩ জনকে আলাদা ঘরে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনও সম্ভাবনা ছিল না আরও প্রশ্নপত্র পৌঁছলে তাঁরা পরীক্ষা দেন। সব পরীক্ষাই নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে।”
কিন্তু প্রশ্নপত্র কম পড়ল কেন?
সদুত্তর দিতে পারেনি বোর্ড। তবে সংস্থার চেয়ারম্যান বিভ্রাটের কথা স্বীকার করে নিয়ে জানান, বোর্ডের গাফিলতি ছিল কি না, তদন্ত হবে। পরীক্ষার জন্য পূর্ব রেল ৫৭টি অতিরিক্ত ট্রেন চালানোয় তিনি রেল এবং রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান। |
|
|
|
|
|