রোজ ভ্যালী নিয়ে অস্বস্তিতে বামফ্রন্ট
বেআইনি লগ্নিকারী সংস্থা বিতর্কে অস্বস্তিতে পড়ল ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকারও।
অস্বস্তি ত্রিমুখী। প্রথমত, রাজ্যে রোজ ভ্যালীকে ব্যবসার অনুমতি দেয় সরকারেরই বিভিন্ন দফতর। পাশাপাশি, মানিক সরকার মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য তথা সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বিজিতা নাথ নিজে শুধু ওই সংস্থায় টাকা রাখেননি, সেখানে টাকা রাখার জন্য রাজ্যবাসীর কাছেও আবেদন জানিয়েছিলেন। এই দু’টি বিষয় নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই রোজ ভ্যালীর চেয়ারম্যান গৌতম কুণ্ডু সব ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তার জন্য বাম সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের রতনলাল নাথ আজ বিধানসভায় বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের আইন অনুযায়ী রোজ ভ্যালী পুরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করেছে। রাজ্যের ‘শপ অ্যান্ড এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট’ অনুযায়ী অনুমতি নিয়ে চেন মার্কেটিং, হোটেল ব্যবসা, রিয়েল এস্টেট, হাউসিং-এর ব্যবসায় নেমেছে।” তাঁর অভিযোগ, “এর আড়ালেই আমানত সংগ্রহ করেছে তারা। অথচ রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে উদাসীন থেকেছে।’’ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে থেকে রোজ ভ্যালী যে ছাড়পত্র পেয়েছে, সেই সব সার্টিফিকেটের কপিও তিনি সভায় পেশ করেন। এই অভিযোগকে ঘিরে বিধানসভায় গণ্ডগোলের জেরে অধিবেশন বার বার মুলতুবি হয়ে যায়।
অর্থমন্ত্রী বাদল চৌধুরী বিরোধীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘রাজ্যে আমানতকারীদের লগ্নি যাতে সুরক্ষিত থাকে, তাই এ ধরনের সংস্থার বিরুদ্ধে রাজ্যের আইন অনুযায়ী তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ আমানতকারীদের কোনও অভিযোগ থাকলে জেলা প্রশাসন বা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতেও তিনি অনুরোধ জানান।
এর মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বিজিতা নাথের প্রসঙ্গ। কংগ্রেসের অভিযোগ, কিছু দিন আগে পর্যন্ত রোজ ভ্যালী-র ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার’-এর ভূমিকায় ছিলেন বিজিতা। অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজিতা বলেন, “২০০৯-এ ওই সংস্থার একটি প্রকল্পে টাকা রাখতে শুরু করি। মেয়াদ শেষে প্রাপ্য টাকা পেয়েও গিয়েছি।” মন্ত্রীর বক্তব্য, “রাজ্যের বহু মানুষ ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের উন্নত ভবিষ্যতের কথা ভেবেই অর্থ লগ্নিতে উৎসাহ দিয়েছিলাম।” এই পরিস্থিতিতে দ্বিতীয়ার্ধে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রাথমিক ভাবে যে ক’টি সংস্থার বিরুদ্ধে রাজ্য সিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছে, তার সংখ্যা ১৫। বর্তমানে তা পৌঁছেছে ২৭টিতে। লগ্নিকারীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রশাসনিক পর্যায়ে যত দূর করা সম্ভব তা করা হবে।”
এর মধ্যেই এক লিখিত বিবৃতিতে রোজ ভ্যালী-র চেয়ারম্যান গৌতম কুণ্ডু বলেন “গত ১৭ বছর ধরে আমরা ত্রিপুরায় ব্যবসা করছি। রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকারের পূর্ণ সহায়তা পেয়েছি। ওখানে আমরা উত্তর-পূর্বের সব থেকে বড় বিনোদন পার্ক তৈরি করেছি, রিসর্ট তৈরি করেছি। জল পরিশোধন প্রকল্প করেছি। ধর্ননগরে একটি হাসপাতাল তৈরির জন্য জমিও কেনা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আইন মেনে সরকারি ছাড়পত্র আমরা পেয়েছি। এতেই প্রমাণিত হয়, সরকারের কাছ থেকে আমরা সব ব্যাপারেই সহায়তা পেয়েছি। তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞও।” রোজ ভ্যালীর যে দুই কর্তাকে ত্রিপুরা পুলিশ গ্রেফতার করেছিল, সোমবার তাদের আদালত অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.