অটোয় মিটার, হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি
বশেষে অটোয় মিটার বসানো নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাতে চলেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। আজ, সোমবার হাইকোর্টে এই আর্জি জানাবে পরিবহণ দফতর।
রাজ্যের কোথাও মিটার ছাড়া অটো চালানো যাবে না বলে গত ৮ মার্চ নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ ছিল, মিটারে অটো কী ভাড়া নেবে, তা-ও বেঁধে দিতে হবে রাজ্য সরকারকেই। রাজ্য জুড়ে মিটারে অটো চালানোর জন্য সরকারকে হাইকোর্ট আট সপ্তাহ সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিল। যে সময়সীমা ইতিমধ্যেই পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু অটো নিয়ে কী করা হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি রাজ্য। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, “হঠাৎ করে কলকাতার সব অটোকে মিটারে চালাতে বললেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, এমনটা নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে মিটারের অটো চালু করতে গেলে প্রচুর সময় দরকার। সেটাও আমরা হাইকোর্টকে জানাব।”
তবে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, ২০১০ সালে কলকাতা হাইকোর্টেরই একটি ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়েছিল, অটো মিটার ছাড়াই চলবে। তার ভাড়া ঠিক করে দেবে রাজ্য সরকার। তার আগে রাজ্য সরকার এই সংক্রান্ত একটি আইন তৈরি করে। সেই আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কয়েকটি অটোরিকশা ইউনিয়ন আদালতে আবেদন জানায়। ইউনিয়নগুলির ওই আবেদন খারিজ করে দিয়ে মিটার ছাড়া অটোর ভাড়া ঠিক করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ২০১০ সালে হাইকোর্টেরই দেওয়া এই রায়কে হাতিয়ার করে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাচ্ছে রাজ্য। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার মতে, “হাইকোর্ট এখন যে রায় দিয়েছে, আগের রায়টি তার ঠিক উল্টো। এখনকার রায় মানতে গেলে তাই হাইকোর্টের অন্য নির্দেশ অবমাননা করা হবে বলে আমরা মনে করছি। সেই কারণে আদালতের কাছেই আমরা জানতে চাইছি, আমরা ঠিক কোন নির্দেশ মানব। হাইকোর্ট এর পরে যা বলবে, তার ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ করবে।”
পরিবহণ দফতরের কর্তাদের একাংশের মতে, দিল্লি-মুম্বইয়ের মতো কলকাতাতেও অটো মিটারে চলা উচিত। কিন্তু বর্তমানে যে ভাবে এই শহরে অটোরিকশা চলে, তারও বেশ কয়েকটি সুবিধা আছে বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন তাঁরা। কম টাকায় যাতায়াতের সুবিধা, শহরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা রুটের কারণে অটোর সহজলভ্যতা-সহ এই সুবিধাগুলি নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে পরিবহণ দফতরের অন্দরে। দফতরের এক কর্তার কথায়, “মিটার চালু করলেই হল না। চটজলদি মিটার চালু করতে গিয়ে যাতে পরিবহণ ক্ষেত্রে নৈরাজ্য তৈরি না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।”
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, সেই নৈরাজ্য আটকাতে প্রাথমিক ভাবে অটোর এলাকাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কলকাতার কয়েকটি রাস্তায় অটো চলাচল নিষিদ্ধও করা হতে পারে। এই সব ব্যাপারে সবিস্তার সিদ্ধান্ত নিতে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরির কথাও ভেবেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে অটোকে শৃঙ্খলায় বাঁধতে পরিবহণ দফতরের কর্তা আশিস ঠাকুরের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করেছিল। সেই কমিটি ২০১২ সালের জুন মাসেই তাদের রিপোর্ট জমা দেয়। কিন্তু তার পরে এত দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত সেই রিপোর্ট প্রকাশই করেনি সরকার। এই অবস্থায় ফের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত ফের সময় কেনারই কৌশল বলে মনে করছেন মহাকরণের একাংশের কর্তারা।
শেষ পর্যন্ত কী হবে, তা নির্ভর করবে সরকারের পুনর্বিবেচনার আর্জির ভিত্তিতে হাইকোর্ট কী নির্দেশ দেয়, তার উপরেই।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.