মোদীকে সামনে রেখে দল গুছোতে নামছে বিজেপি
বন বনশল ও অশ্বিনী কুমারের বিদায়ের পর এ বারে দেশজুড়ে লোকসভা ভোটের হাওয়া তুলতে মাঠে নামছে বিজেপি। কর্নাটকের ব্যর্থতার দায়ও তারা নরেন্দ্র মোদীর ঘাড়ে চাপাতে নারাজ। বস্তুত মোদীকে সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধ দল গড়ে তোলাই এখন তাদের কর্মসূচি।
এই দুই মন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে সংসদের গত অধিবেশন স্তব্ধ করে রেখেছিল বিরোধীরা। বনশল-অশ্বিনী সরলে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী আক্রমণের লক্ষ্যে আসবেন, তেমনটাই কৌশল ছিল বিজেপির। কিন্তু কাল দুই মন্ত্রী চলে যাওয়ার পরেও বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, এখনই প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা নিয়ে চাপ তীব্র করার সময় আসেনি। দল এখনও ভোটের জন্য প্রস্তুত নয়। কর্নাটকে শোচনীয় হারের পর কর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। অন্তর্কলহে বিপর্যস্ত বিজেপি কর্নাটককে এক রকম কংগ্রেসের হাতে তুলে দিয়েছে। যে নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে বিজেপি লোকসভা নির্বাচন লড়ার কথা ভাবছে, তিনি নিজে প্রচারে গিয়েও কর্নাটকে ভোটারদের আস্থা ফেরাতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে দলকে লোকসভার জন্য তৈরি করতে এখন থেকেই নতুন উদ্যমে ময়দানে নামতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সভাপতি রাজনাথ সিংহ আজ দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘোষণা করেন, ২৭ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত দেশে জেল-ভরো আন্দোলন করা হবে। এই কর্মসূচি শেষ হলেই রাজ্যে-রাজ্যে নতুন কর্মসূচি নেওয়া হবে।
সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ। ছবি: পিটিআই
জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে লোকসভা নির্বাচনের কৌশল রচনা হবে। দলের সূত্রের মতে, বৈঠকে মোদীরও আরও এক ধাপ উত্থানের পথ প্রশস্ত হতে পারে। কর্নাটকের মতো রাজ্য যে হাতছাড়া হবে, ইয়েদুরাপ্পা বিদায়ের পর থেকেই তা জানা হয়ে গিয়েছিল বিজেপি নেতাদের। কিন্তু তাঁরা এ-ও জানতেন দিল্লি, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলির বিধানসভা নির্বাচনগুলিই আসলে লোকসভার সেমিফাইনাল হিসেবে গণ্য হবে। তাতে ভাল ফল করে কর্নাটকে হারের গ্লানি মুছতে চান বিজেপি নেতৃত্ব।
মোদী-জাদু সে ভাবে কর্নাটকে কাজ না করলেও বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মত, বিধানসভা ও লোকসভার ভোটের চরিত্র ভিন্ন হয়। বিধানসভা নির্বাচনে যেমন স্থানীয় বিষয় অনেক বেশি গুরুত্ব পায়, লোকসভায় জাতীয় সমস্যার মাপকাঠিতেই ভোট দেন মানুষ। সে জন্যই প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও সনিয়া গাঁধীর উপর ধারাবাহিক চাপ রাখতে চান বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু দল এখনও লোকসভার জন্য প্রস্তুত নয় বলেই সময় কিনতে চায় বিজেপি। তাই গত কয়েক দিন ধরে যে বিজেপি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে সরব হচ্ছিল, আজ রাজনাথ সিংহ সুর কিছুটা নরম করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আত্মমন্থন করলে তাঁর পদত্যাগ করা ছাড়া উপায় নেই।” সনিয়াকেও নিশানা করে তাঁর বক্তব্য, “সনিয়া গাঁধী ও মনমোহন সিংহ দুর্নীতিকে আড়াল করছেন। অশ্বিনী কুমার বলছেন, তিনি নির্দোষ। যদি তাই হয়, তা হলে তিনিই বলুন কাকে আড়াল করার জন্য তাঁকে বলির পাঁঠা হতে হল?”
বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, কংগ্রেস যতই দুর্বল হোক, বিজেপি এখনও সবল হচ্ছে না। গত পাঁচ বছরে মূল্যবৃদ্ধি, দুর্নীতির ধারাবাহিক অভিযোগ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে উঠলেও বাস্তব হল, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, কর্নাটকের মতো রাজ্য বিজেপির হাত থেকে চলে গিয়েছে। এই অবস্থায় লোকসভায় মোদীই একমাত্র পরিত্রাতা। কিন্তু তাঁকে বাড়তি গুরুত্ব না দেওয়ার পক্ষেও সক্রিয় দলের অনেক শক্তি। কর্নাটকে মোদীর প্রচারে ফল না হওয়ার ঘটনাও দলের অনেককে স্বস্তি দিয়েছে। ভোটে জিততে হলে দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। সে জন্যই আজ রাজনাথও মোদীর পক্ষে দাঁড়িয়ে বলেন, “কর্নাটকে মোদী যাওয়া সত্ত্বেও আমরা হেরেছি, এই প্রচার অমূলক। মোদী এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। ভোটে কোনও নেতা লড়েন না, দল লড়ে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.