জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কোচবিহার জেলা থেকে ১৫৬ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে সারদা গোষ্ঠী। পুলিশ সূত্রের খবর, সারদা গোষ্ঠীর শিলিগুড়ি জোনের অফিসার এবং এজেন্টদের একাংশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এ কথা জানা গিয়েছে। এ ছাড়া, শিলিগুড়ি থেকে প্রায় ৬০ কোটি টাকা তুলে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে একাধিক লগ্নি সংস্থা। সারদা-কাণ্ডের পর একাধিক সংস্থার বিরুদ্ধে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে পাওয়া তথ্য থেকে সন্দেহ করছে বিশেষ তদন্তকারী দল। এর মধ্যে সারদা গোষ্ঠী সব থেকে বেশি টাকা তুলেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। টাকার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে সন্দেহ। এখনও পর্যন্ত প্রতারণার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “অ্যানেক্স গ্রুপের প্রসেনজিৎ মজুমদার সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি সংস্থার অফিস সিল করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। আরও কিছু তথ্য হাতে এসেছে। সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সারদা গোষ্ঠীর নিয়ে অভিযোগের পর থেকেই একাধিক অর্থলগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে সামনে আসে আমানতকারীরা। শিলিগুড়ি কমিশনারেটে সারদা, অ্যানেক্স, সারদা প্রিন্টিং গ্রুপ, সাহা ইন্ডিয়া অ্যাগ্রো এন্টারপ্রাইজেস, ভারত কৃষি সমৃদ্ধি প্রোজেক্ট লিমিটেড, ভারত প্রোজেক্ট ইন্ডিয়া লিমিটেড, সানমার্গ মাইক্রো ফাইন্সাস, সারদা হাউজিং প্রাইভেট লিমিটেড, ইউনিকস ইন্সফ্রাসট্রাকচার, প্রয়াগ ইউনাইটেড, সুরাহা মাইক্রো ফাইনান্স, ওভারসিজ অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেডের নামে অভিযোগ দায়ের করে এজেন্ট ও আমানতকারীরা। এর মধ্যে পম্পারাণী পাল ও অমিতাভ দাস নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি পুলিশ। অ্যানেক্সের প্রসেনজিৎবাবুকে ব্যারাকপুরে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাঁকে শিলিগুড়ির মামলাতেও গ্রেফতার করা হয়। এখনও পর্যন্ত যে অভিযোগ থানায় জমা হয়েছে তাতে ১ কোটির উপরে ওই সংস্থাগুলিতে রক্ষিত আছে বলে অভিযোগ হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত পুলিশ সারদা গোষ্ঠী-সহ চারটি সংস্থার অফিসে হানা দিয়েছে। সারদা ছাড়া অ্যানেক্স, ভারত কৃষি সমৃদ্ধি প্রোজেক্ট লিমিটেড, সুরাহা মাইক্রো ফাইনান্সের অফিস রয়েছে। ৫০টি কম্পিউটার ছাড়াও বেশ কিছু কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে এসএফ রোডে সারদা ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস একটি অফিসে হানা দেয় পুলিশ। কম্পিউটারগুলি আগে থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয় সংস্থার কর্তারা। কাগজ ও আসবাবপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। অফিসটিও সিল করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, সারদা গোষ্ঠী শুধু শিলিগুড়ি থেকেই ৪০ কোটি টাকার উপরে তুলে নিয়েছে। অ্যানেক্স ও সুরাহা মাইক্রো ফাইনান্স কয়েক কোটি টাকা তুলে নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ওভারসিজ অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড নীমে এক সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে আমানতকারী অমৃত পাল। তাঁর অভিযোগ, তিনি সংস্থায় ২৫ হাজার টাকার উপরে রেখেছেন। দেড় মাস আগে সংস্থার অফিস বন্ধ হয়ে যায়। ম্যানেজিং ডিরেক্টর তারক শর্মা সহ কর্তারা পলাতক বলে পুলিশ জানায়।
|