গম্ভীরা গানকে হাতিয়ার করে গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প-সহ সমস্ত সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধার কথা পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হল মালদহ জেলা প্রশাসন। বুধবার বেলা ১১টায় হবিবপুরের তাজপুরের লইবাড়ি গ্রামে গম্ভীরা গানের আসর দিয়ে শুরু হয় জনসংযোগ শিবির। প্রথম দিনেই জনসংযোগ শিবিরে ব্যাপক সাড়া মেলায় জেলাশাসক থেকে শুরু করে দুই মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। গ্রামবাসী ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ চাইলে ১৫ দিনের মধ্যে তাকে কাজ দিতে হবে, না ইলে টাকা দিতে হবেএ কথা জানতেনই না আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা জানালেন, আগে কোনও দিন কোনও সরকারি আধিকারিক বা জনপ্রতিনিধি গ্রামে গ্রামে ঘুরে সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধার কথা জানাননি। এ দিন জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও রাজ্যের দুই মন্ত্রীর মুখে নানা সরকারি প্রকল্পের অধিকার ও সুযোগ সুবিধার কথা জানার পরে দীর্ঘদিনের অভিযোগ উগরে দেন তাজপুরের বাসিন্দারা। কেউ বলেছেন, গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, কেউ গ্রামে বিদ্যুৎ না পৌঁছনোর অভিযোগ করেন। দুপুরের রোদ মাথায় ঘণ্টা চারেক এই শিবিরে ছিলেন বাসিন্দারা। এ দিন অনুষ্ঠানের শুরুতে গ্রামের মানুষের মধ্য তেমন সাড়া মেলেনি। |
কিন্তু মঞ্চে মালদহের কুতুবপুরের গম্ভীরা দল গান শুরু হতেই ধীরে ধীরে আসতে শুরু করেন বাসিন্দারা। কিছু পরে মাঠ ভরে যায়। ১০০ দিনের প্রকল্প থেকে শুরু করে শিক্ষার অধিকার, বাল্যবিবাহ, নির্মাণ কর্মীদের বীমা, ‘আমার বাড়ি’ প্রকল্পের কথা গম্ভীরার মধ্য দিয়ে গ্রামবাসীদের শোনানো হয়। বক্তৃতা না করে এ দিন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী গ্রামবাসীর কাছে হাসপাতাল, থানায় গিয়ে তাঁদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতার কথা জানতে চান। রাজ্যের নারী ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “আপনার অধিকার জেনে নিন। কেউ বঞ্চিত করলে আমাদের কাছে অভিযোগ করুন।” জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমার বলেন, “গ্রামবাসীদের কাছে আবেদন করছি আপনাদের কী সমস্যা, কোথায় গাফিলতি, সেগুলি নথিভুক্ত করুন। আপনারা যদি মুখ না খোলেন তবে সমস্যার কথা জানতে পারব না।” তিনি জানান, যাদের জবকর্ড আছে তাঁরা ১০০ দিনের কাজের আবেদন করলে ১৫ দিনের মধ্যে কাজ দিতে বাধ্য প্রশাসন। তাই গ্রামবাসীকে সচেতন হওয়ারও অনুরোধ জানান জেলাশাসক। এ কথা শুনে মেঘরাই মার্ডি, মন্টু হাঁসদা-সহ সাত আট জন গ্রামবাসী অভিযোগ জানান, তিন-চার মাস আগে পুকুর খোঁড়ার কাজ হলেও পঞ্চায়েত থেকে টাকা মেলেনি। তাঁদের দাবি, তাজপুরের সাত থেকে আটশো গ্রামবাসী ১০০ দিনের কাজের টাকা এখনও পাননি। জেলাশাসক জানান, মালদহ জেলার মোট ১৪৬ পঞ্চায়েতে এই সচেতনতা শিবির হবে। |