দাদা, এই বাসটা কি চিটফান্ড যায়?
চেনা জায়গা, চেনা ছাউনি। চেনা রুটেই বাস এসে দাঁড়াল। কন্ডাক্টর চেঁচিয়ে বলতে লাগলেন, ‘‘দাদা, চিটফান্ড স্টপ এসে গিয়েছে! নেমে পড়ুন-নেমে পড়ুন!’ কয়েক জন যাত্রী কাগজপত্রের ফাইল নিয়ে বাস থেকে হুড়মুড়িয়ে নেমে পড়লেন।
সারদা কাণ্ডের মহিমায় নিউটাউন এলাকার পরিচিত একটি বাসস্টপের নাম রাতারাতি বদলে গিয়েছে। দিন সাতেক আগেও যে জায়গাটিকে লোকে ‘গোলবাড়ি’ বলেই চিনতেন, সেটাই এখন ‘চিটফান্ড স্টপ’ বলে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। কারণ, এখানেই তৈরি হয়েছে শ্যামল সেন কমিশনের অফিস। প্রতি বছর শীতকালে নির্দিষ্ট কয়েকটা দিন ময়দান পরিচিত হত ‘বইমেলা’ বাস স্টপ হিসেবে। এখন প্রতি বছর মিলনমেলা প্রাঙ্গণের সামনে সায়েন্স সিটি একই ভাবে ‘বইমেলা’ বাসস্টপে বদলে যায়। তেমনটাই হয়েছে গোলবাড়ির ক্ষেত্রেও।
নিউটাউনে যাত্রাগাছির পরেই ছিল গোলবাড়ি বাস স্টপ। সেখানে রাস্তার উপরে থাকা ফিনান্সিয়াল সেন্টারের বাড়ির মাথাটা গোলাকৃতি হওয়ার জন্যই জায়গাটি গোলবাড়ি বলে পরিচিত হয়েছিল। কিন্তু সারদা কাণ্ডের পরে গত সোমবার থেকে স্টপটির নাম বদলে গিয়েছে। সেখানেই প্রতিদিন আসছেন আমানতকারী থেকে এজেন্টরা। তাঁদের অনেকেই জানেনও না ওই জায়গাটির আসল নাম কী!
অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
ওই এলাকা দিয়েই ডানকুনি, পার্ক সার্কাস, মধ্যমগ্রাম, টালিগঞ্জ, করুণাময়ী, ধুলাগড়ের বাস চলাচল করে। বুধবার দুপুরে ওই স্টপের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে দেখা গেল, সব বাসই ওই জায়গায় দাঁড়াচ্ছে। কন্ডাক্টররা চেঁচাচ্ছেন ‘চিটফান্ড এসে গিয়েছে।’ বাস থেকে নেমেই হন্তদন্ত হয়ে কমিশনের অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন ধুলাগড়ের বাসিন্দা পলাশ মজুমদার। তিনি বললেন “বাসে উঠে কিছুতেই মনে করতে পারছিলাম না কোন জায়গায় নামব! শেষে আমার হাতে একগাদা কাগজপত্র দেখে কন্ডাক্টরই বললেন জায়গার নাম নাকি চিটফান্ড।” পাশাপাশি হেঁটে যাওয়া ডানকুনির বাসিন্দা এক বৃদ্ধের সহাস্য মন্তব্য: “নামে কী হবে। জায়গাতে পৌঁছনো চাই। তা হলেই হবে।”
এমনিতে নিউটাউন এলাকায় কোনও জায়গা সহজে খুঁজে পাওয়া দুরূহ। কেন না, অধিকাংশেরই নির্দিষ্ট কোনও লোকেশন কিংবা ল্যান্ডমার্ক নেই। কমিশনের অফিস হওয়ার পরে যাত্রী, বাস কন্ডাক্টররা মিলেই জায়গাটির নতুন নামকরণ করেছেন বলে মন্তব্য স্থানীয় এক বাসিন্দার।
ওই রুটের বাস কন্ডাক্টরেরা জানাচ্ছেন, গত সোমবার কমিশনের অফিসে কাজ শুরু হলেও তৈরি হওয়ার সময় থেকেই সেখানে ভিড় জমাতেন আমানতকারী ও এজেন্টরা। এখন প্রতিদিনই কমিশনের অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। তাতে নাকি বাসের আয়ও বেড়েছে। শুধু সারদা কাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত লোকজনই নন, অন্যান্য লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানাতে আসছেন অসংখ্য মানুষ। গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে ১০ টাকা দিয়ে লস্যি খেয়েও গলা ভেজাচ্ছেন তাঁরা। চিটফান্ড বাস স্টপের লস্যি-ও এ ক’দিনে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে!
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.