একদিনেই লগ্নিকারীদের সম্পদ বাড়ল ৬০ হাজার কোটি টাকা। মঙ্গলবার ২১৫ পয়েন্ট বেড়ে সেনসেক্স ফের ২০ হাজারের দিকে এগোনোর জেরেই শেয়ার বাজারে টাকা ঢেলে পকেট ভর্তি করেছেন লেনদেনকারীরা। থমকে নেই নিফটি-ও। ৭২.৫০ পয়েন্ট বেড়ে তা পেরিয়েছে ৬ হাজার পয়েন্ট।
মঙ্গলবার সেনসেক্স দিনের সর্বোচ্চ ১৯,৯১৭.৮৮ পয়েন্ট ছুঁয়েও শেষে কিছুটা পড়ে বন্ধ হয় ১৯,৮৮৮.৯৫ অঙ্কে। আগের দিনের থেকে যা ১% বেশি। গত তিন মাসে এত বেশি বাড়েনি সেনসেক্স। ৩০ শেয়ারের এই সূচকের অন্তর্গত ২৫টি শেয়ারই এ দিন বেড়েছে। এই উত্থানে নেতৃত্ব দেয় হিরো মোটোকর্প, যা বেড়েছে ৩.৬৫%। সাধারণ ভাবে ভোগ্যপণ্যের শেয়ার-দর বেড়েছে ২%, ব্যাঙ্কিং শিল্পের ১.৮%। লগ্নিকারীদের প্রত্যাশা জাগিয়ে ভারতীয় শেয়ার বাজারে বুল-দের এই আধিপত্যের মূলে কাজ করেছে বেশ কিছউ কারণ। এগুলি হল:
•
বিশ্ব বাজার গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাঙ্গা হয়ে ওঠা
• জাপানের নিক্কেই সূচকও ৩.৫% বেড়ে পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ হওয়া
• বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির ভারতের বাজারে বিপুল আগ্রহ দেখানো
• রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে সামান্য হলেও ঋণে সুদ কমানোর ব্যবস্থা করা
• শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে আশা, যে পরিসংখ্যান এ সপ্তাহেই প্রকাশিত হওয়ার কথা
বিশ্ব বাজারের হাত ধরেই এ দিন মূলত চাঙ্গা হয়ে ওঠে ভারতের বাজার। যার মধ্যে চার দিন বাদে খোলা জাপানের বাজার সকাল থেকেই উত্থানে ইন্ধন জোগায় দালাল স্ট্রিটকে। ইউরোপের বাজারও ছিল চাঙ্গা। অস্ট্রেলীয় শীর্ষ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর খবরও বিভিন্ন ব্লু চিপ (বড় সংস্থার) শেয়ারকে টেনে তুলতে সাহায্য করে। মার্কিন বাজারে সোমবার এস অ্যান্ড পি ৫০০-এর রেকর্ড ছোঁয়ার জের মঙ্গলবার এসে পড়ে ভারতের বাজারে। আমেরিকায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি নিয়ে আশা এবং আর্থিক ত্রাণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ওয়াল স্ট্রিটকে চাঙ্গা করতে সাহায্য করে।
ভারতের বাজারের প্রতি আস্থাশীল বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি সোমবারই প্রায় ৮৯৮ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে। মঙ্গলবারও তাদের শেয়ার কেনার আগ্রহ অটুট ছিল বলে বাজার সূত্রের খবর। তারা টাকার চাহিদা বাড়িয়ে দেওয়ায় এবং রফতানিকারীদের ডলার বিক্রির জেরে এ দিন বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে টাকার দামও বেড়েছে। দিনের শেষে ৪ পয়সা বেড়ে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৪.১৪ টাকা। বিশ্ব বাজারেও পড়েছে ডলারের দাম।
সোনার দাম অবশ্য মঙ্গলবার পড়েছে। বিশ্ব বাজারে এবং তার প্রভাবে ভারতে এ দিন কমেছে সোনা। কলকাতায় প্রতি ১০ গ্রাম পাকা সোনার দাম ২৬৫ টাকা কমে হয়েছে ২৭,৭৭০ টাকা। মুম্বই বাজারে তা ২০৫ টাকা কমে হয়েছে ২৭,২৯০ টাকা। বিশ্ব জুড়ে শেয়ার বাজার চাঙ্গা হয়ে ওঠাই সোনার দাম কমার কারণ বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। নিরাপদ লগ্নির মাধ্যম হিসেবে সোনার চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়াই এর পেছনে কাজ করেছে বলে তাঁদের ধারণা।
|