ঝড়ের দরকার হয় না। সামান্য হাওয়াতেই চলে যায় সিগন্যাল। তার পরে কখন যে সে ফিরবে, তার ঠিক নেই। গ্রাহকেরা বারবার করে ফোন করছেন ‘কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস’ বা গ্রাহক পরিষেবা শাখায়। কিন্তু কোনও জবাব মিলছে না বিএসএনএলের। আসলে তাদের ওই শাখাটিই দেড় মাস ধরে বন্ধ। তার ফল ভুগতে হচ্ছে রাজ্যের গ্রাহকদের।
ক্ষতি হচ্ছে বিএসএনএলেরও। হাজারো ফোন সংস্থার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উঠতে পারছে না তারা। শনৈ শনৈ এগিয়ে চলেছে অন্যেরা। অথচ গ্রাহকদের চাহিদা মেটানোর তাগিদ দেখা যাচ্ছে না বিএসএনএলের। সরকারি সংস্থা বলেই যেন গ্রাহকদের হয়রানি বা নিজেদের দুরবস্থার ব্যাপারে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই তাদের।
কেন এই হাল?
বিএসএনএল সূত্রের খবর, গ্রাহকদের অভিযোগ নথিবদ্ধ করার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকা নিয়ে গোলমালের জেরে সেই সংস্থা দেড় মাস ধরে কাজ বন্ধ রেখেছে। ফলে ‘কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস’ স্তব্ধ। কবে ফের ওই পরিষেবা মিলবে? দিনক্ষণ জানাতে পারেননি বিএসএনএলের চিফ জেনারেল ম্যানেজার গৌতম চক্রবর্তী। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “গ্রাহদের খুব অসুবিধা হচ্ছে বুঝি। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফের ওই পরিষেবা চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছি।”
টেলিফোন সংস্থার যে-শাখার যোগাযোগ সব সময় গ্রাহকদের সঙ্গে, গ্রাহকদের না-জানিয়েই সেই পরিষেবা কেন বন্ধ করে দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন উঠেছে। কর্তৃপক্ষের যুক্তি, যে-সংস্থা এত দিন ওই শাখাটি চালাচ্ছিল, তারা আদালতে মামলা করেছে। মামলার নিষ্পত্তি না-হলে এই পরিষেবা ফের চালু করা যাবে কি না, চালু করা গেলেও সেটা কবে, তা বলতে পারছেন না বিএসএনএল-কর্তারা।
টেলিফোনের যাবতীয় সমস্যায় গ্রাহক পরিষেবা শাখাই মুশকিল আসানের ভূমিকা নেয়। দেশের প্রতিটি টেলিফোন সংস্থাই গ্রাহকদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য ‘কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস’ চালু করেছে। সেগুলি ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে। ফোনের যে-কোনও সমস্যায় ওই সার্ভিস নম্বরে ফোন করলেই সুরাহা হওয়ার কথা। অন্য সব টেলিফোন সংস্থার ওই পরিষেবা চালু থাকলেও ব্যতিক্রম বিএসএনএল। দীর্ঘ দেড় মাস ধরে গ্রাহক পরিষেবা শাখা অচল হয়ে থাকা সত্ত্বেও তাদের তরফে বিশেষ কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। আর এই অপেশাদার মনোভাবের জন্যই বিএসএনএল ক্রমশ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে বলে শুধু গ্রাহক নয়, সংস্থার কর্মীদেরও অভিযোগ। বিএসএনএল সূত্রের খবর, পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলির থেকে ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে থাকায় সরকারি সংস্থা বিএসএনএলের মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা কমতে কমতে এখন মাত্র ৪০ হাজারে ঠেকেছে। অথচ দেড় বছর আগেও সেটা ছিল প্রায় দেড় লক্ষ। |