সুদ কমানো নিয়ে শিল্পমহল, শেয়ার বাজারের চাহিদা যখন তুঙ্গে, তখনই সব আশায় জল ঢেলে দিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বৃহস্পতিবার আগাম জানিয়ে দিল, সেই সম্ভাবনা নেহাতই ‘সীমিত’। তার জন্য দরকার লগ্নি বৃদ্ধির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো সরকারি নীতির সংস্কার। এ দিকে, অন্তত ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমবে, এটা ধরে নিয়ে শীর্ষ ব্যাঙ্কের এই ঘোষণার আগেভাগেই সেনসেক্স ২৩২ পয়েন্ট বেড়ে তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অঙ্ক ১৯,৭৩৫.৭৭ পয়েন্ট ছুঁয়ে ফেলে। ৬,০০০ টপকে যায় এনএসই-র সূচক নিফ্টি-ও।
শুক্রবার ২০১৩-’১৪ সালের ঋণনীতি ঘোষণার ঠিক একদিন আগে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সমীক্ষায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) হুঁশিয়ারি দিয়েছে, “খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি এখনও চড়া। বাগে আসেনি বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি খাতে লেনদেনে ঘাটতিও। ফলে সুদ কমানোর ঝুঁকিও যথেষ্ট।” রিপোর্ট অবশ্য এ কথাও বলেছে, “বিশ্ব বাজারে সোনা এবং অশোধিত তেলের দাম কমা বাণিজ্য ঘাটতির ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে কিছুটা স্বস্তি জুগিয়েছে। কিন্তু তা সাময়িক। তাই তার উপর ভরসা করে ‘আত্মতৃপ্তি’-র সুযোগ নেই। তাই ঋণনীতির ক্ষেত্রে পা ফেলতে হবে খুব সাবধানে।” এর ভিত্তিতে তেমন কোনও সিদ্ধান্ত নিলে তাতে ‘দূরদর্শিতার কোনও ছাপ থাকবে না’। |
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অবশ্য সদ্য শেষ হওয়া ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষে মোট ১০০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমিয়েছে। এই মুহূর্তে এক দশকে সবচেয়ে নীচে নেমে আসা আর্থিক বৃদ্ধি (৫%)-কে টেনে তুলতে এবং উৎপাদনে উৎসাহ জোগাতে তার উপর সুদ আরও কমানোর জন্য চাপ রয়েছে শিল্পমহলের। কারণ, সে ক্ষেত্রে কমবে শিল্প-ঋণে সুদের হার। বাড়তি নগদের জোগান হাতে পেলে বাড়বে উৎপাদন। অন্য দিকে, বাড়ি-গাড়ি ঋণে সুদ কমলে সেগুলির চাহিদা বাড়বে। চাঙ্গা হবে ঝিমিয়ে পড়া ওই সব শিল্পও। কিন্তু শীর্ষ ব্যাঙ্ক মনে করছে সরকার আর্থিক সংস্কারের মাধ্যমে জোগানে বাধা দূর না-করলে এবং লগ্নি সহায়ক নীতি না-নিলে শুধু সুদ কমিয়ে কাজের কাজ হবে না।
সুদ কমলে যে-সব শিল্প বেশি চাঙ্গা হবে, সে-সব সংস্থার শেয়ার দরই বৃহস্পতিবার অনেকটা বাড়ে। এর মধ্যে আছে ব্যাঙ্কিং ও আবাসন সংস্থার শেয়ার। অন্য দিকে, সার্বিক ভাবে চাঙ্গা বাজারে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার দর বেড়েছে ভারতের বাজারে বিদেশি আর্থিক সংস্থার আগ্রহের উপর ভর করে। টানা ৩ দিনের লেনদেনে সেনসেক্স বাড়ল প্রায় ৪৫০ পয়েন্ট। |