গণজাগরণ মঞ্চ ভাঙায় নিন্দার ঝড় বাংলাদেশে
মৌলবাদী হেফাজত ইসলামের কর্মীদের হটানোর পাশাপাশি পুলিশ শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চও উচ্ছেদ করায় অসন্তোষ ছড়িয়েছে বাংলাদেশে।
যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের ফাঁসি, স্বাধীনতার বিরোধিতা করা জামাতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ করা ও আসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার দাবিতে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগ চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে আসছিল বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম। তাদের দাবির সমর্থনে দেশ জুড়ে পাড়ায় পাড়ায় গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে উঠেছিল। রবিবার সমাবেশের নামে ঢাকা লন্ডভন্ড করে মৌলবাদী হেফাজত ইসলামির হাজার হাজার কর্মী। গত দু’দিনে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে তাদের তাণ্ডবে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৩ জন। রাজাকারদের বিচার বন্ধের পাশাপাশি শাহবাগের অবস্থাকারীদের উচ্ছেদের দাবিও জানায় মৌলবাদীরা। রবিবার গভীর রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকার মতিঝিল থেকে মৌলবাদীদের সরিয়ে দেয়। তার পরে বুলডোজার দিয়ে গণজাগরণ মঞ্চ ভেঙে শাহবাগ চত্বরও ফাঁকা করে দেয়। সরকারের দাবি, রাজধর্ম পালন করতে তাদের দু’পক্ষের অবস্থানই তুলে দিতে হয়েছে। কিন্তু মৌলবাদী ও গণজাগরণ মঞ্চকে এ ভাবে এক করে দেখার নীতির সমালোচনায় অনেকেই মুখর হয়েছে।
সোমবার ঢাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় মঙ্গলবার মিছিল করেন প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলনকারীরা। তাঁদের মুখপাত্র ইমরান এইচ খান লিখিত বিবৃতিতে বলেন, “গণজাগরণ মঞ্চ শ্বাশ্বত চেতনার মঞ্চ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষ এই মঞ্চ হৃদয়ে ধারণ করে। মঞ্চ ভেঙে বা সরিয়ে দিয়ে এই আন্দোলন দমানো যাবে না। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।” তিনি বলেন, হেফাজতের নামে জামাতে ইসলামি ও তাদের সংগঠন ছাত্র শিবির ঢাকা জুড়ে সন্ত্রাস চালিয়েছে। আর তাদের দাবি মেনে সরকার গণজাগরণ মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে।
সরকারের শরিকরাও গণজাগরণ মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার সমালোচনা করেছেন। রাজশাহির সাংসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ফজলে হোসেন বাদশা কলকাতায় বলেন, সন্ত্রাস সৃষ্টি করা হেফাজতে ইসলামি ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি গণজাগরণ মঞ্চকে এক করে দেখাটা অনুচিত ও অযৌক্তিক। সরকারের এই পদক্ষেপে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক মানুষরা যেমন হতাশ হয়েছেন, উল্লসিত হয়েছে জামাতে ইসালমি ও বিএনপি।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতা শাহরিয়ার কবির ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানিও সরকারের এ পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন। শাহরিয়ার কবির বলেন, সরকার ভয় পেয়ে মৌলবাদীদের তোষণের পথ ধরেছে। কিন্তু এর ফলে মৌলবাদীরা সংযত তো হবে না, আরও বাড়বাড়ন্ত হবে তাদের। কামাল লোহানি বলেন, ৫ ফেব্রুযারি শাহবাগে আন্দোলন শুরুর পরে গোটা দেশে গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে ওঠে। মৌলবাদীদের আক্রোশের নিশানা ছিল এই মঞ্চগুলি, কারণ তাদের যাবতীয় অপপ্রচারের বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক জনমত গড়ে তুলছিল এই আন্দোলন। রাজধর্ম পালনের দোহাই দিয়ে সরকার শাহবাগের সমাবেশ উচ্ছেদ করে প্রমাণ করল, তারা মৌলবাদের আস্ফালনকে ভয় পেয়েছে। লোহানি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নিজের জোরেই এই লড়াই চালিয়ে যাবেন এবং বরাবরের মতো মৌলবাদীদের পরাজিত করবেন।
হেফাজতের ওপরে ‘পুলিশি নির্যাতনের’ প্রতিবাদে কাল থেকে দু’দিন হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি-জামাত জোট। তার আগে আজই চট্টগ্রামে একটি ট্রেনের ৫টি এসি কামরা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আগুন দেওয়া হয় বহু গাড়িতেও।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.