কারও হাতে সুকুমার রায়ের আবোল তাবোল। কেউ ব্যস্ত পাগলা দাশুর পাতা ওল্টাতে। কেউ আবার মজে গিয়েছে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভোদঁড় বাহাদুরে। কোচবিহার সদর মহকুমার রামভোলা হাই স্কুলে আয়োজিত শিশু ও কিশোর বইমেলার খণ্ডচিত্র। সর্বশিক্ষা মিশনের উদ্যোগে বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলির্শাস গিল্ডের সহযোগিতায় সোমবার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনের ওই বইমেলা।
এ দিন মেলার উদ্বোধন করেন পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক আমিনুল আহসান, স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মহাদেব শৈব্য প্রমুখ। শুরুর দিনে কচিকাঁচাদের ভিড় ও উৎসাহ দেখে খুশি ত্রিদিববাবু বলেন, “বই পড়ার ঝোঁক কমছে এমন কথা না বলে ছেলেমেয়ের হাতে বই তুলে দিতে হবে। ওদের পচ্ছন্দের বই বেছে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। আগে তালিকা দেখে বই পাঠিয়ে দিতাম। এতে ব্যবসা হয়েছে কিন্তু ছোটরা বই গ্রহণ করল কিনা সেটা বোঝা যায়নি। ওই দিক থেকে মেলার গুরুত্ব ভিন্ন।” |
জেলার হাইস্কুল, প্রাথমিক স্কুলে বই কেনা ছাড়া পাঠাগার পরিকাঠামো উন্নয়নে ৭৮৭২ টাকা এবং ২৩১১ টাকা করে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। ওই টাকায় পচ্ছন্দের বই কেনার সুযোগ দিতে জেলায় ৬টি শিশু ও কিশোর বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার সদর মহকুমায় প্রথম মেলার আসর বসে। সেখানে ৭ থেকে ১৭ বছর বয়সের ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন লেখকের ৮০টি প্রকাশনী সংস্থার হাজারের বেশি নমুনা বইয়ের সম্ভার রয়েছে। সর্বশিক্ষা মিশনের বরাদ্দ ছাড়াও স্কুল গ্রান্টের টাকা খরচ করে বই কেনার সুযোগ রয়েছে। সদর মহকুমার স্কুলগুলিকে নিয়ে আয়োজিত ওই বইমেলায় পুন্ডিবাড়ি গিয়ে জিডিএল গার্লস স্কুলের ছাত্রী ইশিতা দাস জানায়, বড়দের সঙ্গে গিয়ে ছোটদের বই খুঁজতে সমস্যা হয়। এক লহমায় ভোদঁড় বাহাদুর বনজঙ্গলের গল্প মিলছে। ছাত্রী রাখি পণ্ডিতের কথায়, “সাপ নিয়ে জানার ইচ্ছে বহু দিনের। এখানে সে রকম বই পেতে অসুবিধা হচ্ছে না।” পড়ুয়ার পাশাপাশি খুশি শিক্ষক শিক্ষিকারা। শিক্ষিকা সোমা সাহা বলেন, “জেলা বইমেলায় ছাত্রীদের উৎসাহ দিতে নিয়ে গিয়েছিলাম। আমাদেরও ভাল লাগছে।” বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলির্শাস গিল্ড সূত্রে জানা যায়, জেলার নানা এলাকায় মেলা চলবে ২২ মে পর্যন্ত। |