জেলা হাসপাতাল সহ তিনটি সরকারি দফতর গত কয়েক বছর ধরে রায়গঞ্জ পুরকর মেটাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই সমস্ত দফতরে বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ লক্ষ টাকা। পুর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, গত কয়েকমাস ধরে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের চিঠি দিয়ে বকেয়া করের টাকা মেটানোর অনুরোধ করা হয়েছে। লাভ হয়নি। পুরসভার চেয়ারম্যাণ মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “কয়েক মাস ধরে হাসপাতাল সহ সরকারি দফতরের কর্তাদের কাছে কয়েকবার চিঠি দিয়ে কর মেটানোর অনুরোধ করেছি। লাভ হয়নি। কিছু দিন দেখব। টাকা মেটানো না হলে দফতরগুলির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।”
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন সরকারি দফতর আর্থিক বছরে তিন মাস অন্তর চার দফায় করের টাকা মেটাতে পারে। এ ছাড়াও আর্থিক বছরের শেষ দিন, অর্থাৎ ৩১ মার্চের মধ্যে পুরো করের টাকা মেটানোর নিয়ম রয়েছে। রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের করের পরিমাণ ৩ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা। ২০১০ সাল থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরসভাকে করের টাকা না মেটানোয় বকেয়ার পরিমাণ ৮ লক্ষ ৬৯৮৬৪ টাকা। সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর গত তিন বছর ধরে করের টাকা না দেওয়ায় পুরসভার বকেয়া মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। যদিও গত মার্চ মাসে হাসপাতালের তহবিল থেকে পাঁচ বছরের বকেয়া প্রায় ৬ লক্ষ টাকা কর মেটানো হয়েছে। বিষয়টি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের জানানো হয়েছে।”
দমকল কেন্দ্রে বার্ষিক পুর করের পরিমাণ ৩৬ হাজার টাকা। গত দুবছর ধরে কর্তৃপক্ষ সেই টাকা পুরসভাকে না মেটানোয় বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৭২০০০ টাকা। রায়গঞ্জ দমকল কেন্দ্রের ওসি নিতাইচন্দ্র মণ্ডল জানান, গত দু’বছর ধরে রাজ্য সরকার করের টাকা না দেওয়ায় পুরসভার বকেয়া মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি, তিনি করের টাকা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেন। রায়গঞ্জের স্টেট ওয়্যার হাউসিং কর্পোরেশনের বার্ষিক করের পরিমাণ দেড় লক্ষ টাকা। কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ গত তিন বছর ধরে পুরসভার করের টাকা না মেটানোয় বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা। ওই বিষয়ে কর্পোরেশনের উত্তরবঙ্গের আধিকারিক কার্তিক মাহাতো ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।
উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ভাইস চেয়ারম্যান রণজকুমার দাস বলেন, “বছরে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দফতর ও প্রতিষ্ঠান থেকে পুরসভার কর বাবদ আয় হয় প্রায় এক কোটি টাকা। রাস্তাঘাট ও নিকাশি তৈরি ও সংস্কার, জঞ্জাল অপসারণ, বিদ্যুদয়ন, নলকূপ বসানো সহ বিভিন্ন নাগরিক পরিষেবার উন্নয়নের জন্য পুরসভার প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ হয়। রাজ্য সরকারের দফতরগুলি নিয়মিত করের টাকা না মেটানোয় উন্নয়নমূলক কাজ থমকে যাচ্ছে।” |