সারদা কান্ডের জেরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় লগ্নি সংস্থাগুলির দফতরে টাকা ফেরত চেয়ে আমানতকারী ও এজেন্টদের ভিড়, বিক্ষোভ অব্যাহত। সোমবার ডুয়ার্সের মেটেলিতে সারদা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান সুদীপ্ত সেন ও কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। ময়নাগুড়িতে ভাঙচুর হয় একটি উঠে যাওয়া সংস্থার দফতর। রায়গঞ্জেও একটি লগ্নি সংস্থার অফিসে আমানতকারীদের বিক্ষোভকে ঘিরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ দিন সকাল থেকে বিভিন্ন লগ্নি সংস্থার দফতরে আমানতকারীরা ভিড় করেন। ময়নাগুড়িতে প্রায় এক সপ্তাহ আগে উঠে যাওয়া একটি সংস্থার দফতরে ঢুকে ভাঙচুর চালান তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, সুরাহা মাইক্রোফাইনান্স নামে ওই সংস্থার কর্তারা কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। টাকা ফেরত চেয়ে ভিড় জমে আরও দুটি সংস্থার দফতরেও। এ দিন আমানতকারীরা রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড় এলাকাতেও সাইন ইন্ডিয়া নামে একটি সংস্থার ম্যানেজারকে ঘেরাও করে ঘণ্টা দেড়েক বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভ চলাকালীন আতঙ্কে সংস্থার কর্মীরা অফিস ছেড়ে বাইরে বার হয়ে যান। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ম্যানেজার ১০ মে’র মধ্যে আমানতকারীদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। আমানতকারী দীপা মাহাতো বলেন, “১০ শতাংশ সুদে প্রতিমাসে ২০০ টাকা জমা করেছি। এক বছরে ২ হাজার ৪০০ টাকা জমা হয়েছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। ১০ মে’র মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়া না হলে পুলিশে অভিযোগ জানাব।
এ দিকে বালুরঘাটে সারদার অফিস থেকে বাজেয়াপ্ত করা ভল্ট থেকে পাওয়া গেল মাত্র পাঁচ টাকা। গত বৃহস্পতিবার যুবশ্রী মোড়ের সারদার অফিসে হানা দিয়ে পুলিশ কম্পিউটার, আলমারী সহ যাবতীয় নথি বাজেয়াপ্ত করে। সোমবার একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং আইসির উপস্থিতিতে বাজেয়াপ্ত করা ভল্টের তালা খোলা হয়। এ দিন হিলি থানার ত্রিমোহিনী এলাকায় সারদা গোষ্ঠীর নামে কেনা ৯.৩১ একর জমির দলিল পুলিশের হাতে তুলে দেন সংস্থার কর্মীরা। পরে তাঁরা জানান, তদন্তের কাজে সরকারকে সহযোগিতার জন্য ওই উদ্যোগী হয়েছেন। তবে আমানতকারী ও এজেন্টদের দায়ের করা অভিযোগের সহায়তা নিয়ে ফাঁপড়ে পড়েছেন পুলিশ কর্তারা। আমানতকারী এবং এজেন্টদের দায়ের করা দু’শোর বেশি অভিযোগের তদন্ত চালাতে গিয়ে নাজেহাল দশা হয়েছে তাঁদের। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সোমবার পর্যন্ত সারদার বিরুদ্ধে ১৯৯টি এবং অন্য ৩টি সংস্থার বিরুদ্ধে আরও ৬০টি অভিযোগ হয়েছে। মামলার তদন্তের জন্য পদস্থ পুলিশ অফিসারদের নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি নির্দেশে প্রত্যেকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। মামলা রুজু করা হচ্ছে।” |