জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্প |
পাঁচ কোটি টাকা মজুরি বাকি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পের টাকা না-মেলায় বিপাকে ময়নাগুড়ি ব্লকের ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। ওই ব্লকে গত আর্থিক বছরে কাজের বকেয়ার পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। মজুরি না-পেয়ে প্রতিদিন জব কার্ডধারীরা ভিড় জমাচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েতে। ওই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত কর্তারা নতুন প্রকল্প শুরু করতে সাহস পাচ্ছেন না। ভারপ্রাপ্ত বিডিও সমরেশ রায় বলেন, “প্রতিদিন পঞ্চায়েতগুলিতে বকেয়া মজুরির জন্য লোকজন ভিড় করছেন। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। দেখা যাক কত তাড়াতাড়ি টাকা মেটানো সম্ভব হয়।” বকেয়া টাকা মেটানো সম্ভব না-হওয়ায় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তারা নতুন সব প্রকল্প ফাইল বন্দি করে রেখেছেন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দুলালী অধিকারী বলেছেন, “কাজ বন্ধ রাখা ছাড়া উপায় নেই। বকেয়া টাকা এখনও মেটানো সম্ভব না হওয়ায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। নতুন প্রকল্প হাতে নিয়ে বিপদে পড়তে হবে। টাকা পেয়ে গেলে তবেই নতুন প্রকল্প শুরু হবে।”
গত অর্থবর্ষে ময়নাগুড়ি ব্লকের ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ওই প্রকল্পে ২ লক্ষ ৯৩ হাজার ৮৪৫ শ্রমদিবসের সৃষ্টি হয়। অদক্ষ শ্রমিকদের দিনে মাথা পিছু ১৩৬ টাকা হারে মজুরির ভিত্তিতে ওই শ্রম দিবসের মজুরির পরিমাণ ৪ কোটি টাকা। প্রকল্পে দক্ষ শ্রমিকদের মজুরি ও সামগ্রীর জন্য ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ কোটি টাকা। মার্চ মাসের শেষে ওই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও বরাদ্দ না পৌঁছনোয় পঞ্চায়েত কর্তারা তা পারেননি। এপ্রিল মাসের শেষেও পুরো টাকা বকেয়া পড়ে আছে। ফলে নতুন প্রকল্পের কথা ভাবতে পারছেন না ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, “বর্ষার আগে কিছু কাজ করা দরকার। তবে সে সব কাজ শুরু করা যাবে কি না তা বলা যাচ্ছে না।”
প্রশাসনের কর্তারা জানান, ব্লকে সব চেয়ে বেশি বকেয়া রামসাই গ্রাম পঞ্চায়েতে। টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৪৮ লক্ষ টাকা। ধর্মপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাওনা প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা, দোমহনি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৪১ লক্ষ টাকা, বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। আমগুড়ি, চূড়াভান্ডার, খাগরাবাড়ি, ময়নাগুড়ি সহ কোনও গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জবকার্ডধারীদের মজুরির টাকা দিতে পারেনি। বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অতীন্দ্রনাথ রায় বলেন, “এক দিকে কাজ করতে বলা হচ্ছে। অন্য দিকে টাকা নেই। অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। লোকজন টাকা না পেয়ে খেপে যাচ্ছে। তাই প্রকল্প তৈরি করেও কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে।” একই মত দোমহনি-২ পঞ্চায়েতের প্রধান দীনবন্ধু রায়ের। ময়নাগুড়ির পঞ্চায়েত প্রধান গোবিন্দ রায় বলেন, “ব্লক প্রশাসনের কর্তারা শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন।” |