এসপিকে রিপোর্ট তলব: কার্শিয়াঙের বদলে শিলিগুড়িতে কেন |
সৈরিনি-কাণ্ডে প্রশ্ন বিচারকের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
সৈরিনির সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার মোর্চা ও জিএনএলএফ সমর্থকদের কি কারণে কার্শিয়াংয়ের বদলে শিলিগুড়ি আদালতে হাজির করানো হল তা পুলিশ সুপারের কাছে বিশদে জানতে চাইলেন বিচারক। সোমবার ধৃত ৩০ জনকে শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হলে জামিন নাকচ করেন এসিজেএম মধুমিতা বসু। তাঁদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন তিনি। এরই পাশাপাশি, পরবর্তীতে তাঁদের কার্শিয়াং আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেন।
সরকারি আইনজীবী সুদীপ রায় বসুনিয়া বলেন, “আইনশৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় ধৃতদের কার্শিয়াংয়ের বদলে শিলিগুড়িতে হাজির করানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সে ব্যপারে পুলিশ সুপারের ব্যাখা চেয়ে ১৪ দিনে রিপোর্ট দিতে বলেছেন বিচারক। পরবর্তীতে ধৃতদের কার্শিয়াং আদালতে হাজির করাতে বলা হয়।” পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানান, জেলা জজকে পরিস্থিতির কথা জানিয়ে অনুমতি নিয়ে তাঁরা ধৃতদের শিলিগুড়ি আদালতে হাজির করেছেন। তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে ভেবেই ওই ঘটনায় ধৃতদের শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হয়েছে। নিয়ম মেনে সব জানিয়ে জেলা জজের কাছে অনুমতি নেওয়া হয়েছে।” |
সোমবার শিলিগুড়ি আদালতে জিএনএলএফ কর্মী-সমর্থকরা।—নিজস্ব চিত্র। |
সৈরিনির ঘটনার পর ৩২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদের মধ্যে জিএনএলএফের ৮ জন। বাকিরা মোর্চা সমর্থক। জিএনএলএফ সমর্থকদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি, মোর্চা সমর্থকদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে। এ দিন ৮ জন জিএনলএফ সমর্থক ও ২২ জন মোর্চা সমর্থককে শিলিগুড়ি আদালতে হাজির করানো হয়। সাধারণ ভাবে কার্শিয়াং ও মিরিক থানার ওই মামলায় ধৃতদের কার্শিয়াং আদালতে হাজির করানোর কথা।
পুলিশের তরফে জানানো হয়, কার্শিয়াঙে ধৃতদের তুললে আইনশৃঙ্খলা অবনতি হতে পারে। ধৃতদের ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। সে কারণে তাদের শিলিগুড়ি আদালতে হাজির করানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, বছর চারেক আগে মোর্চার সঙ্গে জিএনএলএফের মারপিটের ঘটনা ঘটে কার্শিয়াঙে। ওই ঘটনায় ধৃত জিএনএলএফের ৩ জনকে কার্শিয়াং আদালতে হাজির করাতে গিয়ে পুলিশ হামলার মুখে পড়ে। তিন আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এক জনের হদিস আজ পর্যন্ত মেলেনি।
এর পরেই বিচারক ধৃতদের জামিন নাকচ করে দিয়ে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আইনশৃঙ্খলার অবনতি কেন হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ সে ব্যপারে ১৪ দিনের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট শিলিগুড়ি আদালতে জমা দিতে বলেন বিচারক। ধৃত ২ জন মোর্চা সমর্থককে দার্জিলিং আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক জামিন নাকচ করে দেন। মোর্চার আইনজীবী তরঙ্গ পণ্ডিত বলেন, “বিচারক ধৃতদের জামিন নাকচ করে দিলেও দ্রুত তাদের কার্শিয়াং আদালতে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতদের শিলিগুড়ি আদালতে কেন তোলা হলে সে ব্যপারেও পুলিশ সুপারের কাছে জানতে চান তিনি।” জিএনএলএফের ধৃতদের হয়ে এ দিন জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী কাকলি বসু বিশ্বাস। তিনি বলেন, “ধৃতদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ঠিক নয়। তাঁদের আজ, মঙ্গলবার কার্শিয়াং আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।” মোর্চা নেতা তথা কার্শিয়াং পুরসভার চেয়ারম্যান সমীরদীপ ব্লোন আদালতে যান। তিনি বলেছেন, “জিএনএলএফ আমাদের সমর্থকদের উপরে হামলা করে। পরে আমাদেরই ক’জনকে ধরে মারধর করে পুলিশ। এটা ঠিক নয়।” |