ছাত্রছাত্রীদের দেখভালের ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগ তুলে ডায়মন্ড হারবারের মশাট মহাশক্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঘেরাও করে সোমবার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। গত শনিবার ছুটির পরে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী ভিতরে থাকা সত্ত্বেও স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে চলে গিয়েছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ঘণ্টা চারেক পরে তার চেঁচামেচি শুনে গ্রামবাসীরাই তালা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে। সেই ঘটনার প্রতিবাদেই সোমবারের বিক্ষোভ। শিক্ষক-শিক্ষিকারা অবশ্য ওই ঘটনার জন্য এ দিন ক্ষমা চেয়ে নেন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ স্কুল ছুটি হয়ে যায়। তার কিছু ক্ষণের মধ্যে স্কুল বন্ধ করে চলে যান চার শিক্ষক-শিক্ষিকা। তখন স্কুলের ভিতরে ঘুমিয়ে পড়েছিল দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী কণিকা মণ্ডল। ঘণ্টা চারেক বাদে তার ঘুম ভাঙে। নিজেকে একা স্কুলের মধ্যে দেখে সে ঘাবড়ে যায়। তার চেঁচামেচি শুনে গ্রামবাসীরাই এসে স্কুলের তালা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে।
সোমবার সকাল ১০টা থেকেই শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। এক শিক্ষক এবং তিন শিক্ষিকা স্কুলের সামনে এসে ঘেরাওয়ের মুখে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা তাঁদের ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান। কেউ কেউ বদলিরও দাবি তোলেন। কণিকার বাবা মশাট গ্রামের বাসিন্দা অমিয় মণ্ডল বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষিকারা অন্যায় কাজ করেছেন। স্কুলে আটকে থেকে মেয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিল।”
বিক্ষোভের জেরে এ দিন স্কুল হয়নি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসেন স্কুল পরিদর্শক, বিডিও এবং ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য। সকলকে নিয়ে মহকুমাশাসক তাঁর দফতরে গিয়ে বৈঠক করেন। এর পরে শিক্ষিকারা গ্রামবাসীদের কাছে শনিবারের ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন। শিক্ষিকাদের মধ্যে মাফিজা খাতুন বলেন, “আমাদের ভুল হয়ে গিয়েছে। আমরা গ্রামবাসীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।”
ডায়মন্ড হারবার-১ চক্রের স্কুল পরিদর্শক অভিজিৎ দে বলেন, “ওঁরা ক্ষমা চাওয়ার পরে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।” ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “সমস্যাটির মীমাংসা হয়ে গিয়েছে।” |