‘য়’-এর পরে ‘ৎ’ হঠাৎ উধাও। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে বরং জায়গা করে নিয়েছে ‘ং’।
গোটা রাজ্যের সঙ্গে ‘কুটুম-কাটুম’ নামে ওই পাঠ্যপুস্তকটি জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের মাধ্যমে মুর্শিদাবাদের ৪১টি চক্রের ৩১৭২টি প্রাথমিক স্কুলেও বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু কেন?
সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক অরিজিৎ মিত্র নির্বিকার গলায় বলেন, “সম্ভবত মুদ্রণ প্রমাদ।” দায় এড়াতে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। এ বছরই প্রথম প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি চালু হয়েছে। ওই বিভাগের শিশুদের জন্যই কুটুম-কাটুম প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে ওই বই পড়ে যে সমস্ত কচিকাঁচাদের অক্ষর জ্ঞান হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে তারা ভুল কি শিখছে না? এছাড়াও ওই বইয়ের ১১ নম্বর পাতায় ব, ক, র, ল, ম, ত বর্ণগুলি পরপর সাজিয়ে পাশাপাশি লাঠি, মাছ, তালা, কল, বেলুন, রেলগাড়ির ছবি দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন, বইয়ে এর আগে কোথাও কোনও বর্ণ বা এ-কার, আ-কার, ও-কার শেখানো হয়নি। তাহলে পড়ুয়ারা কিভাবে ব-এর সঙ্গে মিল খুঁজে বেলুন ছবিটিকে চিহ্নিত করবে? একই ভাবে ১৫ নম্বর পাতায় ঠ-দিয়ে ঠোঁট, ঠেলাগাড়ি ও ঠাকুমার ছবিকে চিহ্নিত করার কথা বলা হয়েছে। একই সমস্যা রয়েছে ২৪ নম্বর পাতায়। সেখানে বাংলা বর্ণ না শিখিয়ে হরেক রকমের ফলের ছবির মধ্যে বিভিন্ন বর্ণ দিয়ে কোনটা কোন ফল চেনানো হয়েছে ২৪ নম্বর পাতায়। সেক্ষেত্রে তারা জানবে কি করে যে, ড-দিয়ে ডাব হবে এবং ল-দিয়ে লিচু। ওই বইয়ের ২৬ নম্বর পাতা পর্যন্ত ইংরেজি সংখ্যা শেখানো হয়নি। আচমকা ২৭ নম্বর পাতায় বাংলা সংখ্যার সঙ্গে ইংরেজি সংখ্যার মিল খুঁজে বের করার কথা বলা হয়েছে। পরের পাতাতেই অর্থাৎ ২৮ নম্বর পাতায় ঘোড়ার ছবির গায়ে h লিখে horse বোঝানো হয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) রাখী মণ্ডল অবশ্য এ সব জানেন না। তাঁর গতে বাঁধা উত্তর, “খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
দেখুন কী করা যায়! |