মাঠের মহাযুদ্ধ শুরু হতে বাকি এখনও চব্বিশ ঘণ্টা। কিন্তু আরব সাগরের পারে মাঠের বাইরের যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল।
এবং দুই যুযুধান প্রতিপক্ষের নাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বনাম কেকেআর নয়। দুই প্রতিপক্ষ মুম্বই ক্রিকেট সংস্থা বনাম শাহরুখ খান!
কেকেআর মালিকের সঙ্গে মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার সম্পর্ক কেমন, কারও অজানা নয়। ওয়াংখেড়েতে কিং খানের প্রবেশাধিকার এখনও নেই। নিষেধাজ্ঞা ওঠেনি। সেটা মোটামুটি সবার জানাও ছিল। যেটা জানা ছিল না তা হল, মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার এসআরকে নিয়ে এমন চরমপন্থী মনোভাব।
রীতিমতো চিঠি দিয়ে মুম্বই পুলিশকে এমসিএ জানিয়ে দিল, কোনও অবস্থাতেই যেন শাহরুখকে মাঠে ঢুকতে না দেওয়া হয়!
এমনিতে মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার চত্বরে শাহরুখ ঢুকতে পারবেন না পাঁচ বছর। নিষেধাজ্ঞার কারণে। ওয়াংখেড়েও যার আওতায় পড়ছে। এমসিএ প্রেসিডেন্ট রবি সাওয়ান্ত সোমবার পরিষ্কার জানিয়ে দেন, “আমরা মেরিন লাইন পুলিশকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি যাতে শাহরুখ খানকে মঙ্গলবার ম্যাচের সময় স্টেডিয়ামে ঢুকতে না দেওয়া হয়।” |
ইডেনে রাজস্থান ম্যাচের পর শাহরুখ বলেছিলেন যে, ওয়াংখেড়েতে ঢুকতে গেলে তাঁকে মুখোশ পরে ঢুকতে হবে। কিন্তু কিং খানকে নিয়ে মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার মনোভাব এমন চরমপন্থী দাঁড়াবে, ক্রিকেটমহলের অনেকেই ভাবতে পারেননি। তবে টিম মালিককে নিয়ে এমন নতুন ফতোয়া টিমের মননকে প্রভাবিত করছে, এমন ভাবার কারণ নেই। বরং মুম্বই যুদ্ধ জিতে প্লে অফে ওঠার শপথ নিয়ে রাখছে নাইটরা। শপথ নিচ্ছে মুম্বইয়ের মহানায়কের জন্য প্রাপ্য সম্মান রেখেই।
এমনিতে সোমবার দিনটা নাইটদের নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে কাটল। গত রাতেও শাহরুখ-জুহির পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন নাইটরা। এ দিন আবার কোথাও উপস্থিত থাকলেন জাক কালিস। কোথাও ব্রেট লি। নাইটদের বোলিং মেন্টর আবার সেখানেই সচিনকে নিয়ে বলে রাখলেন, “মিডিয়ায় অনেক বলাবলি হচ্ছে যে, ওর এ বার সরে যাওয়া উচিত। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি সচিন যদি রান করে যায়, যদি ভাল ব্যাট করতে থাকে, তা হলে কখন অবসর নেবে সেটা ও-ই ঠিক করুক। আর কেউ যদি কুড়ি বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে থাকে, তা হলে দু’শো টেস্ট খেলার সুযোগ তার প্রাপ্য।”
কিন্তু এ সবের মধ্যেই প্লে-অফ নিয়ে অঙ্ক ঘুরছে নাইট শিবিরে। নাইট অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর বলে রাখছেন, “কে বলল আমরা প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছি? অনেকে বলছেন যে, বাকি পাঁচটা ম্যাচের পাঁচটাতেই আমাদের জিততে হবে। কিন্তু গত তিন বছরে প্লে-অফে ওঠার হিসেব বলছে আটটা জিতলেই চলে।”
ঘটনা হচ্ছে গত তিন বারের চেয়ে এ বারের অঙ্ক একটু আলাদা। লিগ টেবলের এক নম্বরে চেন্নাই। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে। পরের চারটে টিমেরই আবার ১১ ম্যাচ খেলে পয়েন্ট ১৪। কেকেআরের সেখানে ১১ ম্যাচে পয়েন্ট ৮। মনে করা হচ্ছে, এই অবস্থা থেকে নাইটদের প্লে-অফের দুনিয়ায় ঢুকতে গেলে বাকি সব ক’টা ম্যাচেই জিততে হবে। আরও বলা হচ্ছে, ওয়াংখেড়েতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচই নাইটদের অগ্নিপরীক্ষা। বিভিন্ন কারণে।
যেমন, ওয়াংখেড়ের উইকেট। যা সুনীল নারিনদের মতো স্পিনার নয়, তৈরি হচ্ছে মিচেল জনসনের মতো পেসারদের কথা ভেবে।
যেমন, মুম্বই ক্রিকেটারদের ফর্ম। লাসিথ মালিঙ্গা থেকে মিচেল জনসন সবাই ধীরে ধীরে আগুনে ফর্মে ফিরছেন। গত ম্যাচে চেন্নাইকে মাত্র ৭৯ রানে শেষ করে দিয়েছেন জনসনরা।
ওয়াংখেড়েতে নারিন-সেনানায়কের ফর্মুলাতেই যাবেন কি না, পরিষ্কার করে কিছু বলেননি গম্ভীর। বলেছেন, “ঠিক করিনি। উইকেট দেখিনি এখনও। তবে জাত স্পিনারদের কোনও নির্দিষ্ট ধরনের পিচ দরকার পড়ে না।” |