অনুষ্ঠানের খরচ ৬ লক্ষ, প্রাক্তনীদের উদ্যোগেই কাটল সঙ্কট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
রাষ্ট্রপতি আসছেন। অনুষ্ঠান হবে। কিন্তু খরচ আসবে কোত্থেকে? একটা সময় দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল কর্তৃপক্ষ। খরচও কম নয়, অন্তত ৬ লক্ষ টাকা। স্কুলভবন রং করা থেকে মঞ্চ বাঁধা, সাউন্ড বক্স লাগানো, অতিথিদের টিফিনের ব্যবস্থা আয়োজন নেহাত কম নয়। স্কুলের কোনও তহবিলে এত অর্থ নেই যা দিয়ে খরচ চালিয়ে নেওয়া যাবে। জেলা প্রশাসনের তরফে অর্থসাহায্য মিলবে না। স্কুলের এই সঙ্কটে পাশে দাঁড়ালেন প্রাক্তনীরা। সোমবারের অনুষ্ঠানে যা ব্যয় হল, তার একটা বড় অংশই দিলেন প্রাক্তন ছাত্ররা সাহায্য থেকে। প্রধান শিক্ষক দিলীপ দাস মানছেন, “প্রাক্তন ছাত্ররা সাহায্য না করলে এত বড় আয়োজন সম্ভব হত না।”
|
|
উপহার: রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের একটি ছবি এঁকেছিল মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের
নবম শ্রেণির ছাত্র সুদীপ পাল। সোমবার স্কুলের ১৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে
যোগ দিতে এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি। উপহার স্বরূপ সুদীপের আঁকা ছবিটি রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেন
প্রধান শিক্ষক। ছিলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনও। সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল ঐতিহ্যশালী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শুধু জেলা বা দেশের নানা প্রান্ত নয়, এই স্কুলের বহু কৃতী ছড়িয়ে আছেন বিদেশেও। এমন প্রবাসীরাও অর্থসাহায্য করেছেন। এই তালিকায় আছেন নিরুপম রায়, সায়ন গোস্বামী, সায়ন্ত দত্ত। নিরুপম গবেষণার জন্য আমেরিকায় রয়েছেন। সায়ন ইঞ্জিনিয়র। তিনিও আমেরিকাবাসী। সায়ন্ত রয়েছেন ইংল্যান্ডে। স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই টাকা জমা করে দিয়েছেন এঁরা। এই অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল ১৭৫ বছর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে। স্কুলে প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠনও রয়েছে। নাম ‘প্রাক্তনী’। সংগঠনের আজীবন সদস্য পাঁচশোরও বেশি। অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে প্রাক্তনীদের এই সংগঠনও। সদস্যরা দল বেঁধে প্রাক্তন ছাত্রদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অর্থ সাহায্যের আবেদন করেন। এতে সাড়াও মিলেছে।
‘প্রাক্তনী’র সম্পাদক অগমপ্রসাদ রায় বলে, “স্কুলের জন্য কিছু করার তাগিদ থেকেই ২০০০ সালে এই সংগঠন তৈরি করা হয়। অনুষ্ঠানের জন্য যতটা পেরেছি, সাহায্য করেছি।” ‘প্রাক্তনী’দের যে দলটি বাড়ি বাড়ি ঘুরে অর্থ সাহায্যের আবেদন করেছেন, সেই দলে ছিলেন আশিস কর, দীপঙ্কর সন্নিগ্রাহী। দু’জনেই এই স্কুলের শিক্ষক। আবার প্রাক্তন ছাত্রও। দীপঙ্করবাবুর কথায়, “শুধু প্রাক্তন ছাত্রদের কাছে নয়, অর্থ সাহায্যের আবেদন নিয়ে অভিভাবকদের কাছেও গিয়েছি। সকলে সাহায্য না করলে সমস্যা হত।” |
|
রাষ্ট্রপতির হাতে কলেজিয়েট স্কুলে সভাকক্ষের শিলান্যাস। |
সোমবার মেদিনীপুর কলেজিয়েট (বালক) স্কুলে এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। পাঁচ বছর আগে, ২০০৮ সালে এই বিদ্যালয় ১৭৫ বছরে পা রাখে। সেই সময়ই প্রণববাবুকে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি আসতে পারেননি। মাস দুই আগে স্কুল থেকে এক আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছিল রাষ্ট্রপতির কাছে। আর্জি ছিল একটাই, একবার যদি প্রণববাবু স্কুলে আসেন। সেই আর্জিতে সাড়া দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।
স্কুল কর্তৃপক্ষ গত ২২ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির আগমনবার্তা পান। এরপরই তড়িঘড়ি সব আয়োজন করতে হয়। সকলের সাহায্যে সর্বাঙ্গীন সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়েছে অনুষ্ঠান। |
|