সেই কোন ছেলেবেলায় ‘কাকাবাবু’র গল্প পড়ে কচ্ছপের প্রতি ভালবাসা তৈরি হয়েছিল। যার তার রেশ আজও বয়ে চলেছেন শান্তিপুরের ক্ষৌনিশনগর জুনিয়র হাইস্কুলের গণিতের শিক্ষক বিতান চৌধুরী। সোমবার এক মাছ বিক্রেতার কাছ থেকে হাজার টাকা খরচ করে দু’টো কচ্ছপ কিনে তা তুলে দিলেন বন দফতরের হাতে। তিনি বলেন, “জানি বোকার মতো কাজ বলবেন অনেকে। আমি কিন্তু অসহায় প্রাণীগুলোকে মুক্তি দিতে পেরে খুশি।”
অন্য দিনের মতো সোমবার সকালে স্কুল যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন বিতানবাবু। সেই সময় এক মাছ বিক্রেতা মাছের সঙ্গে দু’টো কচ্ছপও নিয়ে এসেছিলেন। বিতানবাবু কিনে নেন কচ্ছপ দু’টি। অবশ্য এটাই প্রথম নয়। কথা বলতে বলতেই তিনি ফিরে যান ১৭ বছর আগের স্মৃতিতে। ১৯৯৬ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর টিফিনের পয়সা দিয়ে কিনে নিয়েছিলেন একটি কচ্ছপ। সেদিনের সেই কিশোর বয়সেও তা তিনি তুলে দিয়েছিলেন বন দফতরের হাতে। সেদিনের সেই কিশোর আজ দাপুটে শিক্ষক। পরিবর্তন হয়নি মানসিকতার। |
উদ্ধার হওয়া কচ্ছপ। —নিজস্ব চিত্র। |
ইতিহাস হাতড়ে কৃষ্ণনগরের নগেন্দ্রনগরের বাসিন্দা বিতানবাবু বলেন, “ছোটবেলায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কাকাবাবু’ সিরিজের ‘মহাকালের লিখন’ আমাকে ভাবে প্রভাবিত করেছিল। সেখানে একটি বিরাট আকৃতির কচ্ছপকে ঘিরেই লেখা হয়েছিল গল্পটি। গল্পটি বারবার কচ্ছপদের বাঁচাতে উৎসাহিত করে।” কৃষ্ণনগরের পশু হাসপাতালের পাশে মরে পড়ে থাকতে দেখেছিলেন শতাধিক কচ্ছপ। বিতানবাবু বলেন, “পাচার করার সময় ধরা পড়ার ভয়ে লরির চালক কচ্ছপ গুলিকে ফেলে দিয়েছিল। সব ক’টি মারা গিয়েছিল। ওই ঘটনাও সেই সময় আমার মনে
রেখাপাত করে।” বন দফতরের কৃষ্ণনগর রেঞ্জ অফিসার অমলেন্দু রায় বলেন, “আমরা চাই সমাজের প্রতিটি মানুষ তাঁর মতো করে লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।” |