লাদাখে স্বস্তি: বিলের বদলে ইস্তফা চায় বিজেপি
দুর্নীতি ঝেড়ে ঘুরে দাঁড়াতে কেন্দ্রের অস্ত্র খাদ্য বিল
দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে এ বার খাদ্য সুরক্ষা বিলকে হাতিয়ার করল মনমোহন সিংহ সরকার। দুর্নীতির অভিযোগের জেরে বিরোধীরা এখন প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার ও রেলমন্ত্রী পবন বনশলের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন। তার মধ্যেই সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বে আজ লোকসভায় খাদ্য সুরক্ষা বিল পাশে উদ্যোগী হল কেন্দ্র। বিরোধীদের হট্টগোলের জেরে বিল পাশ সম্ভব হয়নি। কিন্তু, কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছে। আগামিকালও এই বিল পাশ করানোর চেষ্টা হবে। সম্ভব না হলে অর্ডিন্যান্স জারি করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
বিজেপির পরিকল্পনা ছিল, ভোটের বছরে দুর্নীতি নিয়ে কেন্দ্রকে কোণঠাসা করা। সে ক্ষেত্রে জনমুখী কোনও বিল পাশ করাতে পারবে না সরকার। ২০০৯ সালে মনমোহন সিংহ সরকার মূলত একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ভর করেই ফের ক্ষমতায় ফেরে। বিজেপি নেতৃত্ব জানেন, আগামী লোকসভা ভোটে সনিয়া গাঁধীর তুরুপের তাস হবে খাদ্য সুরক্ষা বিল। এই বিলে দেশের ৬৭ শতাংশ মানুষকে মাথা পিছু প্রতি মাসে পাঁচ কেজি খাদ্যশস্য এক থেকে তিন টাকা দরে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সনিয়াকে জনপ্রিয়তা কুড়নোর সুযোগ দিতে একেবারেই রাজি নয় বিজেপি। তাই দুর্নীতি নিয়ে তারা অধিবেশন অচল করে রেখেছে।
এই পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়াতে আজ আচমকা লোকসভায় খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে আলোচনা শুরু করে দেয় সরকার। বিরোধীদের হট্টগোলের মধ্যেও খাদ্যমন্ত্রী কে ভি টমাস বিল নিয়ে বলতে শুরু করে দেন। সনিয়া গাঁধী নিজেই বিরোধীদের পাল্টা জবাব দিতে থাকেন। দলীয় সাংসদদের রুখে দাঁড়াতে উৎসাহ দেন তিনি।
লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ পরে দাবি করেন, “সংসদ মুলতুবি হওয়ার ঠিক পরে বিজেপির সাংসদ গণেশ সিংহ কংগ্রেসের উদ্দেশে স্লোগান দিচ্ছিলেন, দাদাগিরি চলবে না, স্বেচ্ছাচারিতা চলবে না। তখন সনিয়া বলেন, এ ভাবেই দাদাগিরি চলবে।”
কংগ্রেসের এই চালে কিছুটা বিপাকে পড়ে গিয়েছে বিজেপি। সংসদের অধিবেশন স্তব্ধ করে রাখার পাশাপাশি সরকারকে তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে, একমাত্র অর্থবিল ছাড়া আর কোনও বিলই তারা পাশ করতে দেবে না। আজ কংগ্রেস পাল্টা আক্রমণে গিয়ে বলেছে, খাদ্য সুরক্ষা বিল ও জমি অধিগ্রহণ বিল আটকে আমজনতা ও কৃষকের স্বার্থবিরোধী কাজ করছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র রেণুকা চৌধুরি বলেন, “বিজেপি নেতৃত্ব বলুন যে ওঁরা খাদ্য সুরক্ষা বিলের বিরোধী! সরকার মানুষের উপকারে বিল আনছে। এতে কার কী ক্ষতি হচ্ছে?” বিলের সমালোচনায় সরব হলেও আজ তৃণমূল নেতৃত্ব খাদ্য সুরক্ষা নীতিকে সমর্থন জানিয়েছেন। কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি ছাড়া আর কেউই এতে বাদ সাধছে না।
খাদ্য সুরক্ষা বিলের বিরোধিতা করা বিজেপির পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তড়িঘড়ি সংসদ চত্বরেই সাংবাদিক সম্মেলন করে সুষমা স্বরাজ বলেন, “নীতিগত ভাবে আমরা খাদ্য সুরক্ষা বিল ও জমি বিল পাশ করানোর পক্ষপাতী।” তিনি সাফ জানান, চলতি অধিবেশন ১০ তারিখ পর্যন্ত চলার কথা। দুই মন্ত্রী ইস্তফা দিন। সরকার বিল দু’টি পাশ করিয়ে নিক। কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু শুধু দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য এই বিল আনার কোনও মানে হয় না।

সমালোচনায় তৃণমূল
সরকারের খাদ্য-সুরক্ষা নীতিকে সমর্থন জানালেও ওই সংক্রান্ত খসড়া বিলের সমালোচনায় সরব হল তৃণমূল নেতৃত্ব। আজ ওই বিল নিয়ে বিতর্কে সরকারের নীতিকে সমর্থন জানালেও বিলটির একাধিক ধারা নিয়ে আপত্তি জানান তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। ইতিমধ্যেই তৃণমূল ওই বিলটিতে একাধিক সংশোধনীও জমা দিয়েছে বলে জানিয়েছে দল। তৃণমূলের মূল আপত্তি হল, ওই বিলের একটি ধারায় বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সরকার দেশবাসীকে খাদ্য-সুরক্ষা দিতে বাধ্য থাকবে না। দীনেশের কথায়, “এটি একটি পরস্পরবিরোধী ধারা। প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলেই মূলত খাদ্যের প্রয়োজন পড়ে। অথচ, সরকার বিপদের সময়ে মানুষের পাশে থাকার বদলে পালিয়ে যেতে চাইছে।” আজ তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছেন, সরকার কোনও বিতর্ক ছাড়াই ওই বিলটি পাশ করিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু বাদ সাধেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। মূলত তাঁর আপত্তিতেই বিতর্ক শুরু করতে বাধ্য হয় সরকার। কংগ্রেস ও তৃণমূল শিবির বক্তব্য রাখার পরেই বিরোধীদের বাধায় অধিবেশন মুলতুবি করে দিতে বাধ্য হন ডেপুটি স্পিকার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.