হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস-এর মালিকানা ছেড়ে রাজ্য সরকারের বেরিয়ে আসার পদ্ধতিগত খুঁটিনাটি চলতি সপ্তাহেই চূড়ান্ত করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী শেয়ার নিলাম করার পথেই এগোচ্ছে রাজ্য। পরামর্শদাতা ডেলয়েটের তৈরি শেয়ার মূল্যায়ন রিপোর্টের ভিত্তিতেই শেয়ার বিক্রির জন্য সম্ভাব্য ক্রেতাদের কাছে ইচ্ছাপত্র চাওয়া হবে।
সোমবার রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম ভবনে শিল্প সচিব চঞ্চলমল বাচাওয়াত ও দফতরের পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে পার্থবাবু জানান, শেয়ার বিক্রির আগে সংস্থাকে চাঙ্গা করাই মূল কাজ। ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার শিল্পোন্নয়ন নিগমের মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকা ঢালতে প্রস্তুত। সে ক্ষেত্রে আর এক অংশীদার চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর আরও ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা। তার পরে ব্যাঙ্ক ঋণ পাওয়া সহজ হবে। কারণ ঋণ দেওয়ার শর্ত হিসেবে বরাবর ব্যাঙ্কগুলি চেয়েছে, সংস্থায় নতুন করে লগ্নি করুক দুই মালিক।
২০১২-’১৩ আর্থিক বছরে সংস্থার লোকসানের পরিমাণ প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, উত্পাদন চালু রাখার জন্য জরুরি কাঁচামাল কেনার অর্থ সংস্থার ভাঁড়ারে নেই। সে ক্ষেত্রে দুই অংশীদারের লগ্নি ও ব্যাঙ্ক ঋণ মিলিয়ে এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারে সংস্থা। পার্থবাবুর দাবি, দুই অংশীদারের মধ্যে আইনি বিবাদ দূরে সরিয়ে আপাতত এই লক্ষ্যেই কাজ করতে চায় রাজ্য। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, রাজ্যের এই সংস্থায় মালিকানা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বড় বড় সংস্থা।
আগামী ৩০ জুনের মধ্যে পেট্রোকেমের মালিকানা ছেড়ে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য। গত ফেব্রুয়ারিতে পরিচালন পর্ষদের বৈঠক শেষে সংস্থার চেয়ারম্যান তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ কথা জানিয়েছিলেন। গত অক্টোবরেই পার্থবাবু জানিয়েছিলেন পেট্রোকেমে শিল্পোন্নয়ন নিগমের সমস্ত শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হবে। সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সে কথা ঘোষণা করা হয়। শেয়ারের পরিমাণ নিয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়া ও তারপর সচিব পর্যায়ের কমিটিতে তা নিয়ে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করার কথা হয়। শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া দেখাশোনা করার জন্য অর্থ দফতর থেকে কেপিএমজি-র মতো প্রায় ১৬টি সংস্থার একটি প্যানেল তৈরি করা হয়। প্যানেলের সংস্থাগুলির এ ধরনের নিলামের সহায়ক হিসেবে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে। এদের মধ্যে থেকেই ডেলয়েটকে বেছে নেওয়া হয়েছে। |