বর্ষপূর্তি হচ্ছে দমকলের অনুমতি ছাড়াই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট ও বোলপুর |
রাজ্য সরকারের বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান শুরুর ২৪ ঘণ্টা পরেও রামপুরহাট কিংবা বোলপুরে কোথাও স্টল তৈরির কাজ শেষ হয়নি। এখানেই শেষ নয়। সরকারি অনুষ্ঠান, অথচ দমকলের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি রামপুরহাটে। এই মেলার ব্যাপারে তাঁদের কিছু জানা নেই বলে জানান, রামপুরহাট দমকলকেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ স্বপন দত্ত। দু’দিন ধরে চলার পরে দমকল আধিকারিকের এই মন্তব্যে অস্বস্তি পড়েছেন আয়োজকেরা। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “মেলার দায়িত্বে আছে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর। তারা দমকলকে জানিয়েছে কি না খোঁজ নিতে হবে। তবে দমকল বিভাগ কি সরকারের বাইরে? তাদের তো এব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত ছিল।” স্বপনবাবু বলেন, “যে কোনও অনুষ্ঠানের জন্য দমকল বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়। এ ক্ষেত্রে কোনও চিঠি পাইনি। রাতে ফোনে মহকুমাশাসক যোগাযোগ করেছেন। কর্মীদের পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।” |
দু’দিনেও তৈরি হল না স্টল। বোলপুরে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী |
একটা সমস্যা যে হয়েছে সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রামপুরহাট মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায়। তিনি বলেন, “উন্নয়নমূলক সভায় দমকলকে সব সময় ডাকা হয় না। সময় কম থাকায় তাদের জানানো হয়নি। তবে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর থেকে জানানোর কথা।” তিনি জানান, ফোনে দমকল বিভাগের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলা না গেলেও দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর বাসুদেব মাইতি বলেন, “মৌখিক ভাবে বলা হয়েছিল। তার পরে তাড়াহুড়োর মধ্যে চিঠি করা যায়নি।” প্রথমে এ কথা বললেও পরে মন্তব্য পরিবর্তন করে বলেন, “চিঠি করা হয়েছে। পেয়েছি কি না খোঁজ নিয়ে দেখছি।” মৌখিত ভাবে জানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন স্বপনবাবু। বোলপুরের ক্ষেত্রে দমকলের অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান মহকুমাশাসক প্রবালকান্তি মাইতি।
এ দিকে, উন্নয়নকে থিম করে রবিবার বোলপুরের গীতাঞ্জলি সংস্কৃতি অঙ্গনে শুরু হয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান। উদ্দেশ্য সরকারের সাফল্য ও উন্নয়নমূলক কাজকে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা। তাই অনুষ্ঠানের থিম ‘উন্নয়নের পথে, মানুষের সাথে।’ জনসাধারণের মাঝে উন্নয়নকে তুলে ধরতে বোলপুর স্টেডিয়াম পর্যটন বিষয়ক প্রদর্শনী হচ্ছে। কিন্তু রবিবার বিকেল পর্যন্ত তো বটেই সোমবারও স্টল তৈরির কাজ শেষ হয়নি। মাত্র দু’টি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে আবার কেউ নেই। স্বাভাবিক ভাবে প্রদর্শনী দেখতে যে কজন এসেছিলেন তাঁরা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। নানুরের বাসিন্দা সত্যনারায়ণ ঘোষ বোলপুরে কাজ করেন। তাঁর কথায়, “বাড়ির লোকেরা জেদ করল, প্রদর্শনী দেখাতে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু মাঠে দিয়ে যা দেখলাম কিছু বলার নেই। শুধুই প্রচার। কাজের কাজ কিছুই হল না।” সত্যনারায়ণবাবুর আরও অনেককে এ দিন হতাশ হয়ে ঘুরে যেতে হল। কেন এত অব্যবস্থা? বোলপুর মহকুমাশাসক প্রবালকান্তি মাইতি বলেন, “সময়ের অভাবে স্টল তৈরি করা যায়নি। সাধ্যমতো চেষ্টা করা হচ্ছে।”
আবার রামপুহাটে পুরসভার কোনও স্টল নেই। কেন স্টল নেই সে ব্যাপারে তৃণমূল পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি বলেন, “উদ্বোধনের দিন আমি কলকাতায় ছিলাম। মহকুমাশাসক যে সময়ে বলেছেন তাতে স্টল করার সময় পাওয়া যায়নি।” |