পুকুর মালিকের সঙ্গে যোগসাজশে চুক্তির কাগজপত্র লোপাট করেছে পঞ্চায়েত, এমন অভিযোগে কালনা ১ ব্লকের সিপিএম পরিচালিত সুলতানপুর পঞ্চায়েতে প্রধান-সহ দশ কর্মীকে অফিসে আটকে রেখে সোমবার বিক্ষোভ করলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত এলাকার রসুলপুরে একটি পুকুর একশো দিনের কাজে সংস্কারের জন্য সরকারি অনুমোদন মিললেও পুকুরের মালিক কাজ শুরু করার অনুমতি দিচ্ছেন না। ফলে গ্রামে কাজ পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। পঞ্চায়েতের তরফে পুকুর মালিকের সঙ্গে সংস্কারের বিষয়ে যে চুক্তি হয়েছিল, তার কোনও নথি মিলছে না বলেও অভিযোগ।
পঞ্চায়েত প্রধান সহদেব মাঝির দাবি, চুক্তির কাগজপত্র এই মুহূর্তে পাওয়া যাচ্ছে না। খোঁজ চলছে। তাঁর বক্তব্য, “পঞ্চায়েতের তরফে পুকুর মালিকের সঙ্গে বারবার কথা বলে সংস্কারের অনুমতি চাওয়া হচ্ছে। ওঁরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কথা বলছেন।” |
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ রসুলপুর গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দাদের নিয়ে তৃণমূল নেতা কর্মীরা পঞ্চায়েত ভবনে ঢোকেন। প্রথমে প্রধানের কাছে ২৬ জনের সাক্ষর সংবলিত একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। তাতে জানানো হয়, ওই পুকুরের মালিক সৈয়দ মহম্মদ তকি ও সৈয়দ ফজলে আহম্মদ ১০০ দিনের কাজে পুকুরটি সংস্কারের জন্য লিখিত ভাবে অনুমতি দিয়েছিলেন। সম্প্রতি বিডিওর কার্যালয় থেকে অনুমোদনও পাওয়া যায়। সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয় প্রায় ৭ লক্ষ টাকা। প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিকের কাজ পাওয়ার কথা সেখানে। কিন্তু এখন মালিক পক্ষই পুকুরটি সংস্কারের জন্য রাজি হচ্ছে না বলে অভিযোগ। তৃণমূলের অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধানই পুকুর মালিকের সঙ্গে যোগ সাজশে পুকুর সংস্কার বিষয়ক নথি লোপাট করে দিয়েছে।
বেলা ১টা নাগাদ ক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা পঞ্চায়েত ভবনে তালা লাগিয়ে দেন। ফলে প্রধান-সহ কর্মীরা আটকে যান। তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, পুকুর মালিককে মুচলেকা দিয়ে মঙ্গলবার থেকে জল তুলে নিয়ে সংস্কারের কাজ শুরু করতে হবে। বাধ্য হয়ে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ প্রধান পুকুর মালিকের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টা নিষ্পত্তি করতে চাইলে তাঁকে অনুমতি দেওয়া হয়। বিকেল পাঁচটা নাগাদ পঞ্চায়েত ভবনে ফিরে এসে প্রধান জানিয়ে দেন, পুকুর মালিক এই মুহূর্তে সংস্কারে রাজি নন। এ কথা শোনার পরে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ এক জন পুকুর মালিক সৈয়দ মহম্মদ তকির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সুলতানপুর পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূলের সুকুর আলি শেখ বলেন, “পুকুরের দুই মালিকের মধ্যে এক জন রাজি না হওয়াতেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পঞ্চায়েত। আমরা দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু করতে চাইছি।” |