অ্যানেক্স কর্তার বাড়িতে বিজ্ঞপ্তি, তল্লাশি ইউরোয়
র্থলগ্নি সংস্থার কাটোয়া ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ‘ফেরার’। এই অবস্থায় তিনি যাতে গোপনে বাড়ি বিক্রি করতে না পারেন, তার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিলেন এজেন্টরা। অ্যানেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ইন্ডিয়া) লিমিটেড নামে ওই সংস্থার কাটোয়া শাখা ইতিমধ্যেই ‘সিল’ করে দিয়েছে পুলিশ। ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সঞ্জয় সান্যালকে পুলিশ খুঁজছে।
গত মার্চের গোড়ায় কাটোয়ার কাছারি রোডের একটি গলিতে অ্যানেক্সের অফিসে তালা পড়ে যায়। এর পরেই এজেন্টরা কাটোয়ার কলেজপাড়ায় ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের বাড়ি ৪৮ ঘণ্টা ঘেরাও করে রেখেছিলেন। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। এজেন্টদের দাবি, ওই দিনই সঞ্জয় সান্যালের সঙ্গে তাঁদের একটি ‘চুক্তি’ হয়েছিল। তাতে বলা হয়, কাটোয়ার কলেজপাড়ার বাড়িটি বিক্রি করে সঞ্জয়বাবু তাঁদের টাকা মেটাবেন।
অ্যানেক্সের এজেন্ট শুক্লা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাদলচন্দ্র দাস, বীথিকা চক্রবর্তীদের অভিযোগ, “ওই চুক্তির পর, ১৩ এপ্রিল থেকে সঞ্জয় সান্যাল সপরিবার বেপাত্তা হয়ে যান।’’ এর কিছু দিন পরেই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রসেনজিত্‌ মণ্ডলকে খড়দার পুলিশ টাকাকড়ি সমেত গ্রেফতার করে। পরের দিন এজেন্টরা কাটোয়া থানায় এবং মহকুমাশাসকের দফতরে বিক্ষোভ দেখিয়ে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। জন্মেজয় মুখোপাধ্যায় নামে এক এজেন্ট কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ইউরো-র অফিসে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র।
এজেন্টদের দাবি, এর পরেও সঞ্জয়বাবু বাড়ি বিক্রি করে ১৫ দিনের মধ্যে আমানতকারীদের টাকা ফিরিয়ে দেবেন বলে তাঁদের সঙ্গে ‘চুক্তি’ করেছিলেন। ওই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। এখন ফেরার হয়ে গিয়ে যাতে গোপনে যাতে বাড়িটি বিক্রি করতে না পারেন বা কোনও ক্রেতা তা কেনার আগে ভাবেন, তার জন্যই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। দোতলা বাড়ির দেওয়ালে সাঁটানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়েছে, সঞ্জয়বাবু ৫০ জন এজেন্ট মারফত ৭০ লক্ষ টাকা জমা নিয়েছিলেন। তিনি ওই টাকা তছরুপ (আত্মসাত্‌) করেছেন। কাটোয়ার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুরেশ রানো অবশ্য বলেন, “এ ভাবে কেউ অন্যের বাড়িতে বিজ্ঞপ্তি দিতে পারে না।” সঞ্জয়বাবুর মোবাইল ফোন টানা বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
সোমবার সন্ধ্যায় কাটোয়া শহরে পালটিয়া রোডের মোড়ে প্যারাডাইস ভবনে ‘ইউরো’ সংস্থার দফতরও ‘সিল’ করে দেয় পুলিশ। সেখান থেকে কম্পিউটার ও বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, বেশ কয়েক দিন ধরে ইউরো-র কাটোয়া শাখা বন্ধ ছিল। শুক্রবার স্টেশন বাজার এলাকার বাসিন্দা তাপস সরকার কাটোয়া থানায় অভিযোগ করেন, কয়েক জন প্যারাডাইস ভবনে বসে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে টাকা আদায় করছেন। কলকাতার রামকৃষ্ণ লেনের মণিগোপাল দাস, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির বিশ্বপ্রিয় গিরি, কাটোয়ার আলমপুরের বিশ্বজিত্‌ ঘোষ-সহ পাঁচ জনের নামে নির্দিষ্ট অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, গত নভেম্বর থেকেই ইউরো-র কারবার চলছে। বেশ কয়েক দিন আগেই সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সরিয়ে ফেলে অফিসে তালা মেরে দিয়েছেন অভিযুক্তেরা। সে কারণে এ দিন তদন্তকারী অফিসার রামরঞ্জন পাত্র এসিজেএম (কাটোয়া)-র কাছে তদন্তের স্বার্থে দফতরে ঢুকে নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি চান। বিচারক তা মঞ্জুর করায় সন্ধ্যায় রামরঞ্জনবাবু ও কাটোয়া থানার এসআই জুলফিকার আলি বাহিনী নিয়ে প্যারাডাইস ভবনের ভিতর গিয়ে দেখেন, দফতর তালাবন্ধ। পুলিশ তালা ভেঙে ঢুকে দু’টি কম্পিউটার, চেয়ার-টেবিল, নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করে দফতর ‘সিল’ করে দেয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.