ঠাঁই হচ্ছে না মুক্ত সংশোধনাগারে,
তুলি নিয়েই থাকতে হবে রশিদকে
ছিলেন টাডায় বন্দি সাট্টা ডন। এখন সংশোধনাগারের অন্যতম সাফল্যের মুখ। তবু রশিদ খানের জায়গা হচ্ছে না মুক্ত সংশোধনাগারে। লালগোলা মুক্ত সংশোধনাগারে যেতে চেয়ে কারা দফতরের কাছে আবেদন জানান রশিদ। তাঁর আর্জি খারিজ করে দিয়েছে সরকার।
গত প্রায় দু’বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার কয়েক দফায় শতাধিক বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। কারা দফতরের খবর, মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের মধ্যে লালগোলা সংশোধনাগারের বেশ কয়েক জন ছিলেন। ছাড়া পেয়ে তাঁরা চলে যাওয়ায় কিছু জায়গা খালি হয়েছে। তা পূরণের জন্যই সম্প্রতি কারা দফতর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ২৮ জন বন্দিকে বেছেছে। তালিকায় আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ১০ জন, বহরমপুর জেলের ৫ জন, প্রেসিডেন্সি ও মেদিনীপুর জেলের ৪ জন করে বন্দি রয়েছেন। এ ছাড়া দমদম এবং জলপাইগুড়ি জেলের মোট ৫ জন বন্দি রয়েছেন।
কারা নিয়মে, লালগোলা মুক্ত সংশোধনাগারে পরিবার নিয়ে থাকতে পারেন বন্দিরা। জেলের বাইরে সারাদিন কাজ করে আবার সূর্যাস্তের আগে জেলে ফিরেও আসতে পারেন। এক জেলকর্তার কথায়, সংশোধনাগারে থাকাকালীন যাঁরা ‘ভাল ব্যবহার’ করেন, তাঁদেরই মুক্ত সংশোধনাগারে যাওয়ার অনুমতি মেলে। এ বার নতুন যাঁদের লালগোলায় পাঠানো হচ্ছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।
ছবি আঁকছেন রশিদ খান। —নিজস্ব চিত্র
বৌবাজার বিস্ফোরণের মূল অপরাধী রশিদ খান রয়েছেন আলিপুর সংশোধনাগারে। জেলজীবনে ছবি এঁকে ইতিমধ্যেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। তাঁর ছবি কারা দফতরের আর্ট গ্যালারিতেও স্থান পেয়েছে। জেলের মধ্যে ভাল ব্যবহারের কারণে তাঁকে রক্ষী ছাড়াই কয়েক ধাপে ‘প্যারোলে’ বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবু পরিবার নিয়ে তাঁর লালগোলা সংশোধনাগারে থাকার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে কারা দফতর। তাদের তৈরি ২৮ জন সাজাপ্রাপ্ত বন্দির তালিকায় জায়গা হয়নি বন্দি-চিত্রশিল্পীর।
কারা দফতর সূত্রের খবর, টাডায় অভিযুক্ত হওয়া এবং তাঁর অতীত রেকর্ডই রশিদ খানকে মুক্ত সংশোধনাগারে পাঠানোর ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৯৯৩-এর ১৫ মার্চ বৌবাজারের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত রশিদ খান। ওই বিস্ফোরণে অন্তত ৬৯ জনের মৃত্যু হয়। তিনি টাডা আইনে গ্রেফতার হন ওই বছরেই। কারা দফতরের এক কর্তার কথায়, “টাডায় অভিযুক্ত বন্দিকে মুক্ত সংশোধনাগারে পাঠানোর ঝুঁকি নেওয়া যেতে পারে না। তা ছাড়া, রশিদের বিরুদ্ধে পুলিশেরও নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে।” জেলজীবনে সাট্টা ডনকে যিনি আঁকতে শিখিয়েছেন সেই চিত্ত দে খবরটা শুনে যেন খানিকটা হতাশ, “সরকার যা ভাল মনে করেছে, সেটাই করেছে। এ নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, ছবি আঁকার সঙ্গে ও ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। ওর ব্যবহারও খুবই ভাল।”
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছরের ১৩ জুলাই রশিদ খানকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে সরকারি কর্তারা আলোচনা করেন। সেই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে রাজ্য প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, রশিদ খান এখনও যথেষ্ট কর্মঠ। এখনও তাঁর বাইরে বেরিয়ে নতুন করে দল তৈরি করার মতো সক্ষমতা রয়েছে। পুরনো সঙ্গীদের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। কারা দফতরের মতে, কলকাতা পুলিশের ওই মনোভাবই রশিদ খানের মুক্ত সংশোধনাগারে যাওয়ার পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রশিদ খানের স্বপ্ন তাই পূরণ হচ্ছে না। আপাতত।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.