মালয়েশিয়া ওপেনে তাঁকে শীর্ষ বাছাই করা যে একদম ঠিক ছিল, নিজের প্রথম গ্রাঁ প্রি গোল্ড ট্রফি জিতে সেটা প্রমাণ করে দিলেন পুসারলা বেঙ্কট সিন্ধু!
“এই মুহূর্তে আমার মনের অবস্থা কী, সেটা বলে বোঝানো খুব কঠিন। আমি অসম্ভব, অসম্ভব খুশি!” ফাইনাল জিতে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া চ্যাম্পিয়নের। এত দিন সিন্ধুকে বলা হচ্ছিল বিশ্বের দু’নম্বর সাইনা নেহওয়ালের সুযোগ্য উত্তরসূরি। মালয়েশিয়ায় জিতে ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের ভবিষ্যৎ হিসাবে নিজের দাবিটা আরও মজবুত করে নিলেন উদীয়মান তারকা।
এক লক্ষ কুড়ি হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার মূল্যের টুর্নামেন্টের ফাইনালে হায়দরাবাদের সপ্তদশী এ দিন ২১-১৭, ১৭-২১, ২১-১৯ হারালেন পঞ্চম বাছাই, সিঙ্গাপুরের জুয়ান জু-কে। এই জয়ের ফলে সিঙ্গাপুরের মেয়ের সঙ্গে তিন বারের মুখোমুখি লড়াইয়ে সিন্ধু এগিয়ে গেলেন ২-১। এ দিন অবশ্য দু’জনেই ট্রফিটা মুঠোয় পুরতে সমান মরিয়া ছিলেন। এক ঘণ্টা এগারো মিনিটের ধুন্ধুমার ফাইনালে তিন গেমেই লড়াই চলে এক্কেবারে সমানে-সমানে। নেটে দু’জনেই সমান সংখ্যক পয়েন্ট জেতেন। কিন্তু নিজের পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চির উচ্চতাকে দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়ে থার্ড কোর্ট প্লে আর শক্তিশালী স্ম্যাশে প্রতিপক্ষকে শেষ পর্যন্ত ধরাশায়ী করে ছাড়েন বিশ্বের তেরো নম্বর ভারতীয় মেয়ে। |
নিজের প্রথম গ্রাঁ প্রি গোল্ড ট্রফি
জেতার পরে পুসারলা বেঙ্কট সিন্ধু। ছবি: এপি |
সিন্ধুর বাবা পি ভি রামানা ২০০০ সালে ভলিবলে অর্জুন বিজয়ী। মা পি বিজয়াও নামকরা ভলিবল খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু মেয়ে ভলিবলের নেট ছেড়ে ব্যাডমিন্টনের নেটকে বেছে নিয়েছিলেন পুলেল্লা গোপীচন্দের অল ইংল্যান্ড ওপেন জেতা দেখে। সিন্ধুর ধাত্রীগৃহ সেই গোপীচন্দেরই অ্যাকাডেমি। বাড়ি থেকে যার দূরত্ব ৫৬ কিলোমিটার হলেও কোনও দিনও প্র্যাক্টিসে পৌঁছতে দেরি হয়নি সিন্ধুর। প্রতিভা এবং লড়াকু মনোভাবের জন্য খুব কম বয়সেই নজর কাড়তে শুরু করেছিলেন। প্রথম জাতীয় সাব-জুনিয়র খেতাব জেতেন তেরো বছরে। তার পর থেকে শুধুই উত্থান।
গত সেপ্টেম্বরে অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন, লি জুয়েরুইকে হারানোর পর এক সপ্তাহ আগের ইন্ডিয়ান ওপেনের শেষ আটে হারান প্রাক্তন বিশ্বসেরা চিনা মেয়ে শিজিয়ান ওয়াংকে। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেতাবের কাছাকাছি গিয়েও ফিরতে হচ্ছিল। গত বছর যেমন লখনউয়ে সৈয়দ মোদী ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল টুর্নামেন্টের ফাইনালে হেরে গ্রাঁ প্রি গোল্ড জয় একটুর জন্য হাতছাড়া করেছিলেন। এ দিন অবশ্য আর কোনও ভুল করলেন না সিন্ধু। |