তিনি টিম মালিক। কিন্তু জানতেন না নিয়ম।
তাই শুক্রবার রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচের বিরতিতে কেকেআর ড্রেসিংরুমে ঢুকতে পারলেন না শাহরুখ খান। ঠিক ড্রেসিংরুমে ঢোকার সময় তাঁকে আটকানো হয়।
শুধু এখানেই শেষ নয়। তাঁর টিমের পরের ম্যাচ মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। গত বছর ঝামেলার পর থেকে যেখানে এমনিতেই তাঁর প্রবেশ নিষেধ। তবু শাহরুখোচিত ভঙ্গিতে বললেন, মুম্বইকে হারানোর জন্য তাঁর মাঠে থাকার দরকার নেই।
এমন অনেক কথাই হল শুক্রবার রাতে আইটিসি সোনার-এ আয়োজিত নোকিয়ার প্রেস কনফারেন্সে। রাতে বলাটা হয়তো ঠিক হল না, প্রেস কনফারেন্স শুরুই তো হল ১টার কাছাকাছি!
টিমের সব সদস্য হাজির থাকলেও কালো স্যুট পরা কিং খানই ছিলেন আকর্ষণের কেন্দ্রে। |
জানালেন, টিম ড্রেসিংরুমে ঢোকা সংক্রান্ত নিয়মটা তিনি জানতেন না। “কখনও কখনও আমার টিমের সঙ্গে দেখা করতে ইচ্ছে করে। মনে হয় ওদের কাছে গিয়ে শুভেচ্ছা জানাই। এই মনোভাব নিয়েই ড্রেসিংরুমে যাই। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই আমাকে আটকানো হয়েছে। আমি যেহেতু নিয়মটা জানতাম না, তাই ওটা আমারই ভুল ছিল”, স্বীকারোক্তি শাহরুখের।
কেকেআর-এর পরের ম্যাচ যেহেতু ওয়াংখেড়েতে, তাই স্বাভাবিক প্রশ্ন ছিল তিনি সেখানে যাবেন কি না?
“কিন্তু ওরা তো আমাকে ঢুকতে দেবে না। ‘ইসকে বারে মে ম্যায় অর কয়া বোলু’। তবে আমি কনফিডেন্ট, ওয়াংখেড়েতে ওদের হারানোর জন্য কেকেআর-এর আমাকে লাগবে না। আমার টিম যখন মাঠে খেলবে, আমি ওয়াংখেড়ের বাইরে অপেক্ষা করব। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারানোর পর টিমের সঙ্গে বাইরেই দেখা করব।” শাহরুখ মজা করে বললেও সাদা রঙের বিন ব্যাগে বসা তাঁর টিম কিন্তু গভীর মনোযোগ দিয়েই কথাগুলো শুনছিল।
কিন্তু উইট ছাড়া শাহরুখের প্রেস কনফারেন্স হয় নাকি! ওয়াংখেড়েতে তাঁর প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রসিকতার ঢঙেই বললেন, তিনি ভাবছেন এ বার থেকে বরং মুখোশ পরে ওয়াংখেড়ে যাবেন, তা হলেই হয়তো তিনি ঢুকতে পারবেন।
“আমাকে ইডেনের ড্রেসিংরুমে ঢুকতে আটকানো হল। আমি ওয়াংখেড়েতে ঢুকতে পারি না। মনে হয় সেটা আমার চেহারার জন্য,” হাসতে হাসতেই বললেন তিনি। |
“আমার মুখোশ পরা দরকার। আমার টিমের মধ্যে ব্রেট লিকে দেখেই মনে হয় ও সবচেয়ে ওয়েল বিহেভড। তাই ভাবছি আমিও ব্রেট লির মুখোশই পরব,” বলেন ‘ওম প্রকাশ মাখিজা’।
অনুষ্ঠানের হোস্ট বিক্রম শাঠে কেকেআর-এর অন্য সদস্যদের মধ্যে গৌতম গম্ভীর, জাক কালিস, ওয়েন মর্গ্যান, ইউসুফ পাঠান, মনোজ তিওয়ারিকে মঞ্চে ডাকেন।
গম্ভীরকে প্রশ্ন করা হয়, তিনিও মহেন্দ্র সিংহ ধোনি আর সচিন তেন্ডুলকরের মতো সামরিক বাহিনীর কোনও সাম্মানিক পদ নেবেন কি না?
“না, আমি কখনওই তা করব না। আমার মতে, কেউ পুরো সময়ের জন্য সেনাবাহিনীতে না থাকলে, তার ওই রকম পদ নেওয়া উচিত নয়,” বলেন গম্ভীর। তাঁর উত্তর শুনে বলরুমের অনেককেই দেখা গেল মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য শাহরুখ প্রেস কনফারেন্স শেষ করলেন তাঁর নিজস্ব ভঙ্গিতেই। বললেন তিনি এখনও আশা রাখেন ইডেনে তাঁর টিমই ফাইনাল খেলবে। “আমি জানি কাজটা সহজ নয়। কিন্তু আমার খুব ইচ্ছে কেকেআর ইডেনে ফাইনাল খেলুক। ‘অগর নাইট রাইডার্স ইডেন গার্ডেন্স মে ফাইনাল হি নেহি খেলা তো ক্যায়া খেলা,” জানালেন কিং খান।
আর তার পরেই বললেন ‘বাজিগর’-এর সেই ডায়লগ। বললেন, “আমার টিমই ফাইনালে যাবে। আমার সিনেমার ডায়লগের মতো-- ‘কুছ জিতনে কে লিয়ে কুছ হারনা পড়তা হ্যায়... অর হার কর জিতনে ওয়ালে কো বাজিগর কহতে হ্যায়।” কে বলবে তখন রাত দু’টো! তুমুল হাততালির শব্দ তখন পাঁচতারা বলরুমে।
প্রেস কনফারেন্সের শেষে, গোটা টিম হোটেলের নাইট ক্লাবে পার্টিতে মাতল। ছিলেন রাইমা সেনও। পার্টি চলল ভোর সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত।
সিনেমা হোক কী পার্টি বলিউডের কিং খানের জীবনটা কিং সাইজই, তা আবার বোঝা গেল শুক্রবার রাতে।
না, শনিবার সকালে।
|
শাহরুখের ইডেন-নির্ঘণ্ট |
শুক্রবারের রাত
৮.২০: ইডেনে প্রবেশ,
৯.৪০: তিন তলা থেকে
নেমে আসা,
৯.৪৫: আটকে গেলেন ড্রেসিংরুমের রাস্তায়,
১০.১০: বাধ্য হয়ে আবার কর্পোরেট বক্সে,
১১.২০: ম্যাচ শেষে মাঠে,
১২.২০: ইডেন ছাড়লেন |
|