|
এক ঝলকে... |
পৃথিবী
২৮ এপ্রিল - ৪ মে |
|
দোষী সাব্যস্ত: দোষ জানা নেই |
• পিয়ংইয়ং • কেনেথ বে নিশ্চয়ই বাংলা জানেন না। জানলে বুঝতেন, উলুখাগড়ার কেন প্রাণ যায়! তিনি মার্কিন নাগরিক। ওয়াশিংটন প্রদেশে তাঁর ট্যুর অপারেটরের ব্যবসা। গত নভেম্বরে তিনি এক ট্যুরে উত্তর কোরিয়া গিয়েছিলেন। সে দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের এক বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ, রাষ্ট্রদ্রোহ। তিনি নাকি কিম জং-আন’এর সরকার ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছিলেন। এই অপরাধের চরমতম সাজা মৃত্যু। গত মঙ্গলবার কোরিয়ার সুপ্রিম কোর্টে তাঁর মামলা উঠল। বিচারে রায় হল ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। কোন অপরাধে? রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগটিই প্রমাণিত হল কি না, অন্য কোনও অপরাধ খুঁজে পাওয়া গেল কি না, কিছুই জানায়নি সুপ্রিম কোর্ট। ফলে, অজানা অপরাধেই দোষী সাব্যস্ত বে।
হঠাৎ বে-র প্রতি খড়্গহস্ত কেন উত্তর কোরিয়ার সরকার? অনুমান, তিনি নেহাতই উলুখাগড়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষি করতে সুবিধা হবে বলেই তাঁকে বেকায়দায় ফেলেছে উত্তর কোরিয়া। আগেও দুই মার্কিন নাগরিককে গ্রেফতার করেছিল তারা। শেষ পর্যন্ত তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন পিয়ংইয়ং-এ গিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে আনেন। উত্তর কোরিয়া কিছু দিন আগেও হুঙ্কার দিয়েছে, আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে পারমাণবিক অস্ত্র হানবে তারা। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার সেই সামর্থ্য নেই। এ দিকে, কিছু মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শিথিল না করাতে পারলে, আর্থিক সাহায্য আদায় না করতে পারলেও পিয়ংইয়ং-এর মুশকিল। ফলে, কেনেথ বে-কে টোপ খাড়া করে দরকষাকষি করতে চায় উত্তর কোরিয়া, অনুমান জোরদার।
তবে, ক্লিন্টন যেমন নিজেই গিয়েছিলেন আলোচনা করতে, ওবামা প্রশাসন কিন্তু সেই পথে হাঁটার লক্ষণ দেখায়নি। উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলকেও পিয়ংইয়ং পাঠায়নি। তবে, কূটনৈতিক স্তরে সমাধান খোঁজার চেষ্টা চলছে।
|
• তেল আভিভ • ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ঠিক করেছেন, যা শত্রু পরে পরে। প্যালেস্তাইনের সঙ্গে শান্তিস্থাপন বিষয়ে যা যা প্রস্তাব তাঁর কাছে এসে পৌঁছবে, তিনি তা সটান ‘গণভোট’-এ ফেলবেন। মানুষ যা ভোট দিয়ে ঠিক করবে, সেটাই হবে। হঠাৎ? পঁয়ষট্টি বছরের ইতিহাসে ইজরায়েলে তো আজ অবধি একটিও গণভোট হয়নি? এই আকস্মিক সিদ্ধান্তের কারণ কী? নেতানিয়াহু যে সরকারের প্রধান, সেটা দক্ষিণপন্থী সরকার। তার প্রবণতাই হচ্ছে প্যালেস্তাইনের সঙ্গে কথাবার্তা ইত্যাদির পথ চিরতরে বন্ধ করা। এ দিকে আন্তর্জাতিক চাপটা উল্টো! জাঁতাকলে পড়ে প্রধানমন্ত্রী জনতার উপরই ছাড়তে চান সিদ্ধান্তের দায়। দুই বছরের মধ্যে সরাসরি পারস্পরিক বৈঠক, এটাই তাঁর লক্ষ্য। আর, সে দিকে এগোনোর জন্য গণভোটের তাস এটাই ‘গেম-প্ল্যান’!
|
চৌধুরি জুলফিকর আলি। পাকিস্তানের সরকারি আইনজীবী। পাক ফেডেরাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির হয়ে কাজ করেন। বৃহস্পতিবার গাড়িতে আদালতের দিকে যাওয়ার সময়ে আততায়ীর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেলেন তিনি, তৎক্ষণাৎ মৃত্যু।
বেনজির ভুট্টোর নিধনের পর প্রয়াত নেত্রীর পক্ষ হয়ে তদন্ত করছিলেন আলি। তদন্তের সূত্রে প্রকৃতপক্ষে তাঁকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মুশারফের বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে হয়েছিল, কেননা বেনজির-হত্যার পিছনে মুশারফের প্রত্যক্ষ ভূমিকা থাকুন না থাকুক, বেনজিরের নিরাপত্তার বন্দোবস্তে অত্যন্ত গুরুতর ত্রুটি থেকে যাওয়ার দায়িত্ব তো তৎকালীন প্রেসিডেন্টকে নিতেই হবে! উল্লেখযোগ্য যে, সম্প্রতি পারভেজ মুশারফ দেশে ফিরে আসার পর পাক সরকার তাঁকে আটক করছে ঠিক যে সময়ে, তখনই তাঁর উকিল প্রতিপক্ষ খুন হলেন। সাধে কি আর পাকিস্তানে ষড়যন্ত্র-তত্ত্বের এত বাড়বাড়ন্ত!
আলির নিধনের পর আবার উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তানের আসন্ন নির্বাচন বিষয়ে দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের ঢেউ। সময় তো এসে গেল বলে। সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হবে তো ভোটপর্ব? মুশারফ যদিও খুব জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন না, বেশির ভাগ পাকিস্তানিই মহাখুশি তিনি জেলে ঢোকার পর, তবু কিছু-সংখ্যক সমর্থক তো আছেনই, এবং এঁদের বেশির ভাগই সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ। এঁরা মনে করেন, পাকিস্তানের মতো দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অসম্ভব, বরং একনায়কতন্ত্রই ভাল। আর সেই একনায়ক নির্ধারণে সেনাবাহিনীর একটা বড় ভূমিকা ছাড়া গতি নেই। এবং যে রাজনীতিকরা বেশি জনপ্রিয় (যেমন হত নেত্রী বেনজির ভুট্টো), তাঁদের মধ্যে একটা বড় চ্যালেঞ্জ দেখেন এঁরা। সুতরাং আলির হত্যাকারী কে এখনও ঠিকঠাক জানা না গেলেও, সংশয় একটি বিশেষ দিকেই চালিত হচ্ছে! যাঁরা পাকিস্তানে নেপথ্য থেকে সুতোর নাচনে দেশটার উপর থেকে নীচ মহল, সবকিছুকেই নাচান, অন্তত নাচানোর ক্ষমতা রাখেন, সেই দিকেই।
ভোট তো হচ্ছে পাকিস্তানে। গণতন্ত্র হচ্ছে তো? |