|
|
|
|
জখম লালুকে ফোন করে নীতীশকে বার্তা মোদীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি ও পটনা |
নরেন্দ্র মোদীকে কোনও মতেই প্রধানমন্ত্রী হতে দেবেন না বলে হুঙ্কার দিয়ে রেখেছেন লালু প্রসাদ। দুর্ঘটনায় জখম হওয়ায় তাঁকেই ফোন করে খোঁজখবর নিলেন মোদী।
আপাত ভাবে সৌজন্য। তবে এর মধ্যে রাজনীতির অঙ্কও যে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, ফোন করার কথা টুইটারে প্রচার করে নিজেই সেটা আজ বুঝিয়ে দিলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী।
বিহারের বৈশালীতে গত কাল রাতে প্রায় এক হাজার ঘর পুড়ে যায়। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে আরজেডি সুপ্রিমোর গাড়ি।
তাঁর মাথায় ও মুখে চোট লাগে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দু’জায়গায় সেলাই করে গত কাল রাতেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আজ বৈশালীর উদ্দেশে রওনাও দেন লালু। তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, লোকসভার স্পিকার মীরা কুমার ফোন করেন। একই ভাবে ফোন করে লালুর খবর নেন মোদীও। আজ তা নিয়ে এক টুইটে মোদী নিখেছেন, “গত কাল রাতে লালুজির দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আজ সকালে স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে তাঁকে ফোন করি। আশা করি, তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।”
লালু নিজে বিষয়টিকে লঘু করেই দেখাতে চান। রাজনৈতিক ভাবে লালু ঘোরতর বিজেপি-বিরোধী। বিজেপি-র বিরোধিতা করেই বিহারে তাঁর প্রতিপক্ষ নীতীশ কুমারকে বিঁধতে চান তিনি। এমনকী, নীতীশ যখন মোদীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন, তখনও লালু বলেছেন এ সব ‘লোক দেখানো’। নীতীশ-মোদী-বিজেপি ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। ওঁদের একমাত্র লক্ষ্য, সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে মানুষকে বিভাজিত করে যে কোনও উপায়ে ক্ষমতায় আসা। মানুষকে বোকা বানাতেই নীতীশ প্রকাশ্যে মোদী-বিরোধী মন্তব্য করছেন।
প্রশ্ন হল, লালুর এই অবস্থান জানার পরেও মোদী কেন আরজেডি প্রধানের সঙ্গে টেলি-কথনকে এত গুরুত্ব দিচ্ছেন? কেন তাঁর সৌজন্যের মধ্যে রাজনীতির মিশেলটাকেও স্পষ্ট করে তুললেন টুইটারে তা প্রচার করে? বিজেপি সূত্রের মতে, আসলে এক ঢিলে অনেক পাখি মারতে চাইছেন মোদী। |
|
হাসপাতালে লালু প্রসাদ যাদব। শুক্রবার রাতে। ছবি: পিটিআই |
মোদীর এই ফোন কার্যত শত্রুর শত্রুর প্রতি সৌজন্য। নীতীশ কুমার ইতিমধ্যেই মোদীর পরিবর্তে অন্য কোনও নেতাকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার জন্য এ বছরের শেষ পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন বিজেপি-কে। মোদীকে মুখ করলে নীতীশ এনডিএ ছাড়তে পারেন বলেও আশঙ্কা করছে বিজেপি। বিহারের যে সংখ্যালঘুদের কাছে মাসিহা হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন লালু, নীতীশের মোদী-বিরোধিতার পিছনেও সেই একই কারণ। এই পরিস্থিতিতে নীতীশের প্রতিপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকেও একটি বার্তা দিতে চাইলেন মোদী।
এ ছাড়া, গোড়া থেকেই লালু বিজেপি-বিরোধী। এক সময় লালকৃষ্ণ আডবাণীর রথযাত্রা আটকে তাঁকে গ্রেফতার করার কৃতিত্ব নিয়ে নিজের রাজ্যে ভোটব্যাঙ্ক বাড়াতে চেয়েছিলেন। মোদীকেও সাম্প্রদায়িক অ্যাখ্যা দিয়ে এখন তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়া ঠেকানোর কথা বলছেন।
এই পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনার পর লালুকে ফোন করে মোদী সেই তিক্ততাকিছুটা কম করার চেষ্টা করলেন। রাজনীতির জগতে নিজের গ্রহণযোগতার পরিসর বাড়ানোর চেষ্টা চালালেন তিনি। |
|
|
|
|
|