আবাসন শিল্পে ক্রেতাদের স্বার্থরক্ষায় এ বার মাঠে নামছে কেন্দ্র।
প্রস্তাবিত ‘হাউজিং রেগুলেটরি বিল’ বা আবাসন নিয়ন্ত্রণ বিলে থাকছে নয়া শর্ত। বাড়ির নকশা অনুমোদন করার ক্ষেত্রে এ বার থেকে শুধুমাত্র ‘কার্পেট এরিয়া’ বিবেচ্য হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সচিব অরুণ কুমার মিশ্র সাফ জানিয়েছেন, প্রশাসনিক কোনও অনুমোদনের জন্য ‘সুপার এরিয়া’ বা ‘বিল্ট আপ এরিয়া’ গণ্য করা হবে না। কার্পেট এরিয়ার হিসেবে বাড়ির নকশা অনুমোদন করবে পুরসভা। এবং এই নিয়ম হবে বাধ্যতামূলক।
কেন্দ্রের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে নির্মাণ শিল্পমহল। নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই-এর দাবি, আবাসন শিল্পে এই নয়া নিয়ম স্বচ্ছতা আনবে। ক্রেডাই-এর চেয়ারম্যান ললিত জৈন বলেন, “ক্রেতাদের মধ্যে এই বিষয়টি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। সে ক্ষেত্রে সরকারের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হলে আখেরে সুবিধা হবে ক্রেতা-বিক্রেতা , দু’পক্ষেরই।”
এখন মানুষ আর শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই জোগাড়েই সন্তুষ্ট নয়। বরং অনেক ক্ষেত্রে আবাসনের মধ্যেই মোটামুটি শহরের একটা ছোট সংস্করণ চাইছে তারা। বিশেষত শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে দূরে যে-সব জায়গায় আবাসন তৈরি হচ্ছে। মূল শহর থেকে যা অনেকটাই দূরে। সে ক্ষেত্রে চাহিদার তালিকায় ঢুকে পড়ছে শপিং মল, সপ্তাহ শেষের ছুটি কাটানোর ক্লাব এমন কত কী। ক্রেতা চাইছেন হাতের কাছেই বিনোদনের যাবতীয় উপকরণ। এবং এ সবের জন্য বাড়তি দামও ধরছে নির্মাণ সংস্থাগুলি।
ক্রেডাই-এর দাবি, সাধারণত এ সব ক্ষেত্রে কার্পেট এরিয়া ও সুপার বিল্ট আপ এরিয়া, দু’টিই উল্লেখ করা থাকে। সিঁড়ি, লিফট্, পার্ক, কমিউনিটি হল ইত্যাদির জায়গা সুপার বিল্ট আপ এরিয়া-র মধ্যে ধরে নেওয়া হয়। ললিত জৈন জানান, ছ’মাস আগেই ক্রেডাই-এর পক্ষ থেকে সদস্য সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তাঁরা যেন অবশ্যই কার্পেট এরিয়ার অঙ্কটি উল্লেখ করেন।
নয়া এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন হর্ষ নেওটিয়া। তিনি জানান, যে-নিয়ম শিল্পে স্বচ্ছতা আনবে, তা সর্বদাই স্বাগত। একই সুরে আর এক নির্মাণকারী সন্তোষ রুংতা জানান, বাধ্যতামূলক হলে এই নিয়মে ফাঁকি দেওয়া যাবে না। ফলে ক্রেতাদের বিভ্রান্ত করা যাবে না। ক্রেতাদের আস্থা টেনে আখেরে লাভ করবে আবাসন শিল্পই।
কেন্দ্র নতুন নিয়ম তৈরি করবে। কিন্তু তা কার্যকর করার দায় থাকবে সব রাজ্যের উপরেই। ফলে নয়া নীতির সাফল্য অনেকটাই রাজ্য সরকারগুলির উপর নির্ভর করবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। |