|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
মগজাস্ত্র ভুলিয়া গবেষণা |
বইপোকা |
‘কে সত্যজিতের লেখক সত্তা? ফেলুদা, জটায়ু না তোপসে? এককথায় উত্তর ‘সকলে’!’ নব কলেবরে প্রকাশিত সত্যজিতের কলমে ফেলুদা অ্যান্ড কোং (প্রতিভাস)-এর শেষের দিকে এই মন্তব্যটি চমকিত করিল। সত্যজিতের লেখক সত্তায় রহস্য-রোমাঞ্চ ঔপন্যাসিক জটায়ু? বইটির লেখক সুখেন বিশ্বাসের যুক্তি, ‘গোয়েন্দা গল্পের তিন লেখক হলেন ফেলুদা, জটায়ু আর তোপসে। এই তিন লেখকের লেখক সত্যজিৎ। এই ভাবে অদৃশ্যে লুকিয়ে নিজের বুদ্ধিমত্তা, ব্যক্তিত্ব ও বাঙালিয়ানার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন ফেলুদার মধ্যে। রসিকতার খানিকটা জটায়ু চরিত্রে।’ সুতরাং একে তিন তিনে এক। সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদাকে লইয়া এমন সরলীকরণ একটি আশঙ্কা জাগায়। বাঙালি গবেষক কি তাঁহার মগজাস্ত্র ব্যবহার করিতে ভুলিলেন? নহিলে জটায়ুর রসিকতায় সত্যজিৎ-আবিষ্কার সম্ভব হয় না। তদুপরি কেবল সংকলন ও সারসংক্ষেপের মজুরগিরিই অধুনা গ্রন্থ হইয়া উঠিতেছে। ব্লার্ববচন অনুযায়ী যে গ্রন্থে ফেলুদারা ‘নতুনভাবে আবিষ্কৃত, নবরূপে অঙ্কিত’ তাহার সিংহভাগ কী করিয়া কেবল ফেলুদা-কাহিনির সারাৎসার ও পঞ্জি দিয়া নির্মিত হয়? বিশ্লেষণের ছিটেফোঁটাই এই গ্রন্থে লভ্য। তবে সেই যৎকিঞ্চিতেও ক্ষেত্র গুপ্তের লেখা ফেলুদা বিশ্লেষণের সহায়তা লইতে হইয়াছে। এই সত্যটি প্রথম সংস্করণে স্বীকৃত হয় নাই, এখন হইল। লেখক পরিচয়ের একটি তথ্যও সংশয় উদ্রেক করে। লেখকের নামটি নাকি বাংলা ভাষাতত্ত্বের একনিষ্ঠ পাঠকের অতি পরিচিত। বাংলা ভাষাবিজ্ঞানে এ পর্যন্ত সুখেন বিশ্বাসের গ্রন্থের কোনও মৌলিক গবেষণালব্ধ অধিকার জন্মিয়াছে বলিয়া সাধারণ পাঠকও মানিবেন না, নেহাত নোটবইনিষ্ঠ পাঠকদের কথা স্বতন্ত্র। |
|
|
|
|
|