|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
অজানা নিকাশি |
নকশার সন্ধানে |
কাজল গুপ্ত |
কিছু দিন আগেই বনবিতানের জলাশয়ের জল আচমকাই কালো হতে শুরু করে। অসংখ্য মাছ ভেসে ওঠে। বনদফতরের আধিকারিকেরা পরিদর্শন করে জানান, জলাশয়ের নীচের একটি নিকাশি নালার ছিদ্র দিয়ে ওই ময়লা জল বেরোচ্ছে। খবর যায় বিধাননগর পুরসভায়। কিন্তু পুরসভা প্রাথমিক ভাবে নিকাশি নালার অস্তিত্বই স্বীকার করেনি। পরে পুর-ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, সেখানে ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালা রয়েছে। পরে তা মেরামতও করা হয়।
অভিযোগ, বিধাননগর পুরসভার কাছে ভূগর্ভস্থ নিকাশির মানচিত্র নেই। ফলে মাঝেমধ্যেই এমন সমস্যা হয়।
|
|
যদিও আগের বামবোর্ডের পুরকর্তারা তাঁদের কাছে যে ভূগর্ভস্থ নিকাশির ম্যাপ নেই তা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। ম্যাপ তৈরির নানা পরিকল্পনা হলেও তা কার্যকর হয়নি। ক্ষমতায় এসে বর্তমান পুরবোর্ডও সেই ম্যাপ তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু আজও তা কার্যকর হয়নি।
৬০-এর দশকে সল্টলেক তৈরির সময় নিকাশি, পয়ঃপ্রণালী ও জল সরবরাহের পাইপলাইনগুলি বসানো হয়। সে তথ্য তৎকালীন প্রশাসনের কাছে ছিল বলেই সূত্রের খবর। ১৯৯৫-এ বিধাননগর পুরসভা তৈরির পরে পুরসভার হাতে এই তথ্য আসেনি। প্রাক্তন এক পুরকর্তা জানান, অনেক বার বলা সত্ত্বেও সে তথ্য তাঁদের হস্তগত হয়নি। ফলে বনবিতানের মতো ঘটনা বার বার ঘটবে বলে বাসিন্দাদের আশঙ্কা। যেমন, সল্টলেকের অফিস পাড়ার কাছেই থাকেন শুভেন্দু রায়। তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা একটি প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে মাটি কাটেন। দেখলাম, মাটির তলা থেকে ভুর ভুর করে জল বেরিয়ে রাস্তা ভরিয়ে দিল। কর্মীদের জিজ্ঞাসা করতেই জানালেন, সেখানে যে জলের পাইপলাইন ছিল, তা আগে জানা ছিল না।’’ |
|
শুধু পুরসভাই নয়, এ জন্য সমস্যায় পড়ছে নানা সরকারি দফতর। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, পাইপলাইনের অবস্থান না জানার ফলে সময় ও অর্থ, দুই-ই নষ্ট হচ্ছে।
দীর্ঘ দিন ধরে এই সমস্যা থাকলেও পুরপ্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না?
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এ জন্য পুরসভার উদাসীনতাই দায়ী। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ দেবাশিস জানা বলেন, ‘‘ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনের অবস্থান সম্পর্কে কোনও তথ্যই আমরা পাইনি। এই পাইপলাইনগুলির একটি ম্যাপ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে তা চটজলদি হবে না। প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’ যদিও পুরসভা সূত্রের খবর, এই ম্যাপ তৈরির প্রক্রিয়া যথেষ্ট ব্যয়বহুল। আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণেই সমস্যা হচ্ছে।
পুরসভার সীমাবদ্ধতা থাকলে নগরোন্নয়ন দফতর কি কোনও ভূমিকা নেবে? রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘ওই ধরনের ম্যাপের অবশ্যই প্রয়োজন। এ সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছি। রাজ্য সরকার অবশ্যই সহযোগিতা করবে।” |
ছবি: শৌভিক দে
|
|
|
|
|
|