প্রকল্প রূপায়ণের গতি না বাড়ালে জঙ্গলমহলের তিন জেলায় গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের জন্য এখনই অর্থ বরাদ্দ করা সম্ভব নয় বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দিল কেন্দ্র। গত মঙ্গলবার মুখ্যমন্মত্রীকে পাঠানো চিঠিতে এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ।
পশ্চিমবঙ্গে গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনার জন্য গত মঙ্গলবার দিল্লিতে এমপাওয়ার্ড কমিটির (ইসি) বৈঠক হয়। বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে জয়রাম জানান, ‘গত ডিসেম্বরে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় সড়ক নির্মাণের জন্য ১৪৯১ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে কেন্দ্র। আজ বৈঠকে রাজ্যের তরফে ওই তিন জেলায় আরও ১৬২০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য ৮৬০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। রাজ্যের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ইসি খতিয়ে দেখেছে, স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পর পর এত বড় অঙ্কের টাকা রাজ্যকে দিলে সরকারের রূপায়ণ ক্ষমতার ওপর বিপুল চাপ বাড়বে। এই তিন জেলায় প্রকল্প রূপায়ণ ইউনিটের সংখ্যা ৬টি থেকে বাড়িয়ে ১২টি করতে রাজি হয়েছে রাজ্য। কিন্তু ইসি-র মত হল, নতুন ১৬২০ কিমি সড়ক নির্মাণ করতে হলে ওই ইউনিটের সংখ্যা বাড়িয়ে অন্তত ২২ করতেই হবে’। জয়রাম লিখেছেন, ইউনিটের সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে রাজ্য সিদ্ধান্ত নিলে তবেই নতুন সড়ক নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করবে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, ডিসেম্বরে কেন্দ্র ১৪৯১ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও রাজ্য সরকার এখনও সব সড়কের জন্য টেন্ডার ঘোষণাই করে উঠতে পারেনি। এবং তা সত্ত্বেও নতুন করে ফের অর্থ চাইছে। এই কারণেই কেন্দ্রের এই কঠোর অবস্থান।
সূত্রের খবর, কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার যে ঠিক মতো প্রকল্প রূপায়ণ করতে পারছে না, তা রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের জানিয়েছেন জয়রাম। প্রকল্প ধরে ধরে কোন খাতে রাজ্যকে কত অর্থ গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক দিয়েছে, তা-ও জানিয়েছেন তিনি। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র তথা কংগ্রেসের কৌশল দ্বিমুখী। প্রথমত, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামোন্নয়নের জন্য কেন্দ্র যে বিপুল টাকা বরাদ্দ করছে, রাজ্যের মানুষের কাছে তা তুলে ধরা। সেই সঙ্গে প্রচার করা, বিপুল টাকা পেয়েও প্রকল্প রূপায়ণে ব্যর্থ হচ্ছে তৃণমূল সরকার। দ্বিতীয়ত, মমতা তথা তৃণমূলের কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগকে ভোঁতা করা।” মমতাকে দেওয়া চিঠিতে একেবারে শেষে জয়রাম লিখেছেন, “আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে, গত এক বছরে এই খাতে নজিরবিহীন অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের সেই পদক্ষেপে রাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতার মনোভাবই ফুটে উঠেছে।”
|