তৃণমূল-বিরোধী সুর চড়াতে চান অধীররা
জোট হবে না ধরেই চলার নির্দেশ রাহুলের
রাহুল গাঁধীর ‘একলা চলো’ মন্ত্র এ বার পশ্চিমবঙ্গের জন্যও। আগামী লোকসভা ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে কোনও জোট হবে না ধরে নিয়েই রাজ্য কংগ্রেসকে প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিলেন রাহুল। রাজ্য নেতাদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, এ নিয়ে কোনও সংশয় রাখার দরকার নেই। ২০১৪-য় তৃণমূলের সঙ্গে যদি একান্তই সমঝোতার পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা হবে রাজ্য নেতৃত্বের শর্তে। রাজ্য কংগ্রেসকে উপেক্ষা করে হাইকম্যান্ড কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না বলেই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস সাংসদদের আজ দুপুরে বৈঠকে ডাকেন রাহুল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, তিন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী, দীপা দাশমুন্সি, আবু হাসেম খান চৌধুরী, জঙ্গিপুরের সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ও মালদহের সাংসদ মৌসম নূর ওই বৈঠকে ছিলেন। সূত্রের খবর, রাজ্য নেতারা প্রায় সকলেই রাহুলকে জানান যে, লোকসভা ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের বিষয়টি এখনই স্পষ্ট করে দেওয়া উচিত।
দীপা দাশমুন্সির বক্তব্য, রাজ্য নেতাদের অনেকেই এ নিয়ে সংশয়ে। তাই তৃণমূল-সরকারের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপানোর ব্যাপারে কেউ কেউ দ্বিধায় রয়েছেন। রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী জানান, পশ্চিমবঙ্গে ‘মমতা মিথ’ ভাঙতে শুরু করেছে। তৃণমূলের মধ্যেও অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। এ সব যেমন ঠিক, তেমনই এটাও ঠিক যে, মানুষ সিপিএমের কাছে ফিরতে চাইছে না। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে পায়ের তলায় জমি শক্ত করার সুবর্ণ সুযোগ এসেছে কংগ্রেসের হাতে। দল আগ্রাসী হয়ে সরকার বিরোধিতায় নামলে, বহু মানুষ কংগ্রেসের সঙ্গে পা মেলাবেন।
এই সময়েই রাহুল বলেন, জোট গড়ে যদি কংগ্রেসের কোনও উপকার না হয় এবং শরিক দল যদি মাথার ওপর চেপে বসে, তা হলে সেই ধরনের সম্পর্কে যাওয়ার পক্ষপাতী তিনি নন। অতীতে এ ভাবে বিহারে জোট করে কংগ্রেসের ক্ষতি হয়েছে। জোট বা সমঝোতার জন্য আর কখনও ভিক্ষা করবে না কংগ্রেস। এর পরেই রাজ্য নেতাদের রাহুল বলেন, আপনারাও ভবিষ্যতের কথা না ভেবে একা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হন। যাতে রাজ্যে প্রধান বিরোধী শক্তি হয়ে উঠতে পারে কংগ্রেস।
সূত্রের খবর, বৈঠকে প্রদীপ, দীপা, অধীররা সারদা-কাণ্ড নিয়ে রাজ্যের পরিস্থিতি তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে প্রদীপবাবু জানান, রাজ্য যে তদন্তের কথা বলছে, তাতে তৃণমূল নেতাদের আড়াল করা হবে বলেই মনে করছেন অনেকে। তাই এ নিয়ে সিবিআই তদন্ত অপরিহার্য। এ নিয়ে কেন্দ্রেরও সক্রিয় হওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে যথেষ্টই চাপে পড়বে তৃণমূল। সূত্রের খবর, হাইকম্যান্ডের তরফে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে রাহুল জানান, যখনই সাহায্যের প্রয়োজন হবে, রাজ্য নেতারা যেন এক সঙ্গে আলোচনা করে একটি নোট তাঁকে পাঠান। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবেন।
পরে কংগ্রেসের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, আসল বিষয় হল লোকসভা ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে জোট গড়ার বিশেষ ইচ্ছা রাহুলের নেই। তবে দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকে মনে করেন, যে হেতু ইউপিএ-তে বড় শরিক বলতে আর কেউ নেই, তাই তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার একটা ছোট জানলা খোলা রাখা দরকার। তবে সব স্তরের নেতারাই মনে করেন, জোট হলে তা কংগ্রেসের শর্তেই করা দরকার। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসকে আগের তুলনায় অনেক বেশি আসন দিতে হবে। না হলে জোট করে লাভ নেই। অনেকেরই বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে নিজেদের আসন বাড়িয়ে ভোটের পর রাতারাতি ভোল বদলাতে পারে তৃণমূল। কংগ্রেস আর সেই ফাঁদে পা দিতে চায় না বলেই মত নেতাদের।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.