টাকা চেয়ে ক্ষোভ বাড়ছে, পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এজেন্টরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
সংগঠন তৈরি হয়েছে, চলছে আন্দোলনও। তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে টাকা ফেরতের দাবিতে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে লগ্নিকারী সংস্থাগুলির আমানতকারীদের মধ্যে। টাকা চেয়ে অনেকেই হত্যে দেওয়া শুরু করেছেন এজেন্টদের বাড়িতে। কেউ কেউ এজেন্টদের ফোন করে টাকা ফেরত চেয়ে চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। অ্যানেক্স’র এজেন্টরা অনেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে দাবি করেছেন। কেউ কেউ সংস্থার প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে বসে থাকছেন। এই অবস্থায়, তাঁরা অ্যানেক্স-কর্তা প্রসেনজিৎ মজুমদার, তাঁর সঙ্গে অন্য যারা ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন এবং বিভিন্ন পদাধিকারীদের জমি, বাড়ি বাজেয়াপ্ত করে তা বিক্রি করে আমানতকারীদের টাকা মেটানোর দাবি করেছেন। যে সমস্ত জমি বিক্রি হয়েছে তাও বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানিয়েছেন তারা। রবিবার রাতে প্রসেনজিৎবাবুর বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। সেখান থেকে দুটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে। বাড়িটি সিল করে দেওয়া হয়।
অ্যানেক্স-এর শিলিগুড়ি শাখায় প্রায় চার হাজার এজেন্ট রয়েছেন। আমানতকারীর সংখ্যা লক্ষাধিক। তাঁরা কয়েক কোটি টাকা ওই সংস্থায় জমা রেখেছেন। |
বাঘাযতীন পার্কে সারদা গোষ্ঠীর এজেন্ট এবং আমানতকারীরা। —নিজস্ব চিত্র। |
ফুলবাড়ির বাসিন্দা অ্যানেক্স’র এজেন্ট কৃষ্ণ মণ্ডল জানান, তাঁর সাত লক্ষ টাকার উপরে জমা রয়েছে। তিনি বলেন, “প্রতিদিন সকালে আমানতকারীরা আমার বাড়িতে এসে টাকার দাবি করছেন। কেউ বলছেন গ্যাস সিলিণ্ডার খুলে নিয়ে যাব। কেউ জমি, বাড়ি বিক্রি করে টাকা দিতে বলছেন। আমার একটি ছোট্ট দোকান রয়েছে। সেখান থেকে অনেকেই খরচ নিয়ে গিয়ে টাকা দিচ্ছেন না। এত টাকা কী করে দেব বুঝতে পারছি না।”
বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ওই সংস্থার এজেন্ট বিশ্বজিৎ সরকার, প্রদীপ রায়, সুরেন প্রধান’রা। বিশ্বজিৎবাবুর বাড়ি হায়দরপাড়ার গৌরাঙ্গপল্লিতে। তিনি ২৭ লক্ষ টাকার উপরে জমা রেখেছেন ওই সংস্থায়। তিনি বলেন, “বাড়িতে থাকলেই সবাই এসে হুমকি দিচ্ছে। বাধ্য হয়ে বাইরে থাকতে হচ্ছে।” পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা হবে।”
পাশাপাশি, সারদা গোষ্ঠীর অনেক এজেন্টই আমানকারীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। ওই গোষ্ঠীর এজেন্ট, কর্মীরা, আমানতকারীরা যৌথ ভাবে আন্দোলন করছেন। তাঁদের পক্ষে অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “আমানতকারীদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য। সে জন্যই যৌথ আন্দোলন করছি। ক্ষোভ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু তাঁদের কাছে আবেদন করছি কোনও গণ্ডগোলে না গিয়ে আন্দোলন সামিল হন।” |