নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কলকাতা হাইকোর্টে মামলার জেরে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বেসরকারি স্কুলকে ‘স্পনসর্ড’ বা সরকার-পোষিত স্কুলে রূপান্তরিত করার সরকারি উদ্যোগ ধাক্কা খেল। এই রূপান্তরের ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্তের উপরে মঙ্গলবার স্থগিতাদেশ জারি করেছেন বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত। তিনি জানান, পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত ওই রূপান্তর প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে।
রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান প্রকল্পে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন স্কুলের পরিকাঠামো নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলকে পোষিত স্কুলে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। এই ব্যাপারে আগ্রহী স্কুলগুলিকে আবেদন জানাতে বলা হয়েছিল। সেই সঙ্গেই জানিয়ে দেওয়া হয়, যে-সব স্কুল এই রূপান্তরের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাবে না, সেখানে পরিকাঠামো, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পদ ইত্যাদি অনুমোদন করা হবে না। এখানেই থেমে না-থেকে সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনাগ্রহী স্কুলগুলির সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। রাজ্যে প্রায় ন’হাজার মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজার আবেদন জানায়।
এই রূপান্তরের পরে স্কুলের পরিচালন ব্যবস্থায় অনেকটা পরিবর্তন আসার কথা। এমনিতে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বেসরকারি স্কুল পরিচালনা করে অভিভাবকদের দ্বারা নির্বাচিত পরিচালন সমিতি। কিন্তু ওই সব স্কুলকে স্পনসর্ড বা পোষিত স্কুল করা হলে পরিচালন সমিতিতে সরকার মনোনীত সদস্যদেরই প্রাধান্য থাকবে। এই অবস্থায় পোষিত স্কুল করার ব্যাপারে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা হয়। মঙ্গলবার শুনানিতে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “স্কুলশিক্ষা দফতর এই ভাবে নির্বাচিত পরিচালন সমিতি না-রেখে সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত স্কুলকে সরকার-পোষিত স্কুলে রূপান্তরিত করতে পারে না। কারণ রাজ্যের অধিকাংশ স্কুলই সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত। এই রূপান্তরের ফলে স্কুলগুলির মধ্যে বিভাজন হবে।” তার পরেই ওই রূপান্তর স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। হাইকোর্টের এ দিনের স্থগিতাদেশ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে চায়নি স্কুলশিক্ষা দফতর। |