নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সারদা-কাণ্ডের মধ্যেই শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের জড়িয়ে নতুন বিতর্ক উঠল বিধানসভায়। কলকাতার রয়েড স্ট্রিটে সদর দফতর, এমন একটি অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গে রাজ্য সরকারের মন্ত্রী এবং তৃণমূলের সাংসদদের যোগ আছে কি না, একটি ব্রোশিওর দেখিয়ে প্রশ্ন তুললেন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক উদয়ন গুহ। সংশ্লিষ্ট নেতা-মন্ত্রীরা সকলেই অবশ্য তাঁদের সঙ্গে ওই সংস্থার কোনও বাণিজ্যিক যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেছেন।
অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত বিল বিতর্কে অংশ নিয়েই মঙ্গলবার উদয়নবাবু প্রথমে ওই প্রসঙ্গ তোলেন। কিন্তু বিধানসভার সদস্য নন, এমন কারও বিষয়ে আলোচনা করা যাবে না বলে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ওই প্রসঙ্গ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন। পরে বিধানসভা চত্বরে দিনহাটার বিধায়ক উদয়নবাবু জানান, তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রের কিছু মানুষ সারদা-কাণ্ডের পরে ওই সংস্থার কাছ থেকে তাঁদের লগ্নি করা টাকা ফেরত চাইতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সংস্থার কাউকে না-পেয়ে তাঁরা স্থানীয় বিধায়কের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকেই জোগাড় করা যে ব্রোশিওর উদয়নবাবু হাতে নিয়ে এসেছিলেন, সেখানে ওই সংস্থার উপদেষ্টামণ্ডলীতে রাজ্যের মন্ত্রী মদন মিত্র, তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ, তাপস পাল ও শতাব্দী রায়ের নাম আছে।
এক কংগ্রেস বিধায়কও ওই তালিকায় আছেন। উদয়নবাবু বলেন, “রাজ্য সরকার এক দিকে আইন করছে। আবার শাসক দলের নেতাদের নাম ব্যবহার করেই এই সব সংস্থাকে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে! তা ছাড়া, এই সংস্থাটি তো টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তা হলে আর এই সব সংস্থা বন্ধ করার কথা কী ভাবে বলছেন?”
যোগাযোগ করা হলে তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট সব নেতাই জানিয়েছেন, তাঁদের জ্ঞাতসারে এমন কিছু করা হয়নি। মন্ত্রী মদনবাবুর বক্তব্য, “ওই সংস্থায় থাকার কোনও প্রশ্নই নেই।” সাংসদ সুলতান সাফ জানিয়েছেন, ওই সংস্থার নাম শুনলেও তাদের উপদেষ্টামণ্ডলীতে তিনি নেই। সুলতান পাল্টা বলেন, “যিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁকে আমি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি! আমি কোনও ভাবেই ওই সংস্থার সঙ্গে নেই।”
একই ভাবে তৃণমূলের অভিনেতা-সাংসদ তাপস পালও বলেন, “আমি ওই সংস্থার বিষয় কিছু জানি না। সংস্থার কাউকে চিনি না।” তাপসবাবুর আরও বক্তব্য, “কোনও অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম, তখন কোনও ছবি তোলা হতে পারে। আমি তো টাকা নিয়ে অনুষ্ঠান করি। যেমন প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণারাও টাকা নিয়ে অনুষ্ঠান করেন।” অভিনেত্রী-সাংসদ শতাব্দী রায়ের সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি। ফোন এবং এসএমএসে রাত পর্যন্ত তাঁর তরফে সাড়া মেলেনি। ধরা যায়নি কংগ্রেসের উত্তরবঙ্গের ওই বিধায়ককেও। আর উদয়নবাবু পরে বলেন, “আমি কোনও অভিযোগ করিনি। এলাকার মানুষের কাছ থেকে পাওয়া ব্রোশিওরে যা ছিল, তা-ই দেখিয়েছি।” |