ভাঙা হিন্দি ও আন্তরিকতায় সাঁওতাল
পরগণার মন জিতে নিলেন রাষ্ট্রপতি
‘‘ম্যায় আচ্ছা হিন্দি নেহি জানতে। যিতনা ভি বোলে, গলত বোলে। লেকিন মুঝে আচ্ছা লাগা কি ইধর হামকো বুলায়া গয়া।” তুমুল হাততালি প্রেক্ষাগৃহে। একেবারে বাংলা টানে ভাঙা, ভাঙা হিন্দিতে কুড়ি মিনিট বক্তব্য রাখলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। আর তাতেই জয় করলেন গোড্ডাবাসীর মন।
বাষট্টি বছর পর সাঁওতাল পরগনায় পা রাখলেন ভারতের কোনও রাষ্ট্রপতি। শেষ বার, ১৯৫১ সালে বাবু রাজেন্দ্রপ্রসাদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাঁওতাল পরগনায় এসেছিলেন। ফলে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য শুনতে গোড্ডা ছাড়াও সাঁওতাল পরগনার দুমকা, রাজমহল, সাহেবগঞ্জের মতো জেলাগুলি থেকেও গোড্ডার সুন্দরপাহাড়িতে ভিড় জমান মানুষজন।
জিন্দাল গোষ্ঠীর ১৩২০ মেগাওয়াটের প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শিলান্যাস করতে গোড্ডায় আসেন রাষ্ট্রপতি। একই সঙ্গে জিন্দাল গোষ্ঠীরই একটি পলিটেকনিক ও মডেল কলেজের শিলান্যাসও করেন তিনি। অথর্মন্ত্রী থাকার সময় সাঁওতাল পরগনার তাঁতিদের জন্য মেগা হ্যান্ডলুম ক্লাস্টার প্রকল্প তৈরি করেন প্রণববাবু। ফলে এখানকার মানুষের প্রণববাবুর প্রতি এমনিতেই একটা কৃতজ্ঞতা বোধ রয়েছে।
জিন্দলদের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের শিলান্যাসে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।
সঙ্গে রাজ্যপাল সৈয়দ আহমেদ ও নবীন জিন্দল। ছবি: চন্দন পাল
আজকের ভাষণে প্রণববাবু বলেন, “বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে। তার জন্য কয়লার প্রয়োজন। তবে কয়লাখনি এলাকার আশপাশের গ্রামগুলি যেন বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত না হন। এমন যেন না হয়, যে কারখানা তৈরি করতে জমি দিল একজনআর বিদ্যুৎ পেয়ে লাভবান হচ্ছেন অন্য কেউ।” রাষ্ট্রপতির এই সতর্কবার্তাই এ দিন মন জয় করেছে এখানকার মানুষের। কারণ অতীতের ইতিহাস বলছে, ১৯৫৬ সালে যখন বীরভূমের লাগোয়া মশাঞ্জোর বাঁধ তৈরি হয়, তখন সাঁওতাল পরগনার একশোরও বেশি গ্রাম জলের তলায় চলে যায়। রাতারাতি সব হারিয়ে ভিটেছাড়া হয়েছিলেন সেখানকার অসংখ্য মানুষ।
রাষ্ট্রপতির সামনেই জিন্দাল গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান নবীন জিন্দালকে সেই ইতিহাস মনে করিয়ে দেন রাজমহলের বিজেপি বিধায়ক দেবীধন বেসরা। প্রকাশ্য সভাতেই তিনি বলেন, “জিন্দাল এখানে প্রকল্প করছে শুনেছি। কিন্তু আমাদের কেউ কিছু জানাননি। রাষ্ট্রপতির সামনেই বলছি, জিন্দাল হ’ন আর যেই হ’ন, দেখবেন যেন সাধারণ মানুষ বঞ্চিত না হয়। কয়লাখনি এলাকার মানুষ জিন্দাল গোষ্ঠীকে জমি দিয়েছেন। তাঁরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেটা যেন খেয়াল রাখা হয়।”
সংস্থার চেয়ারম্যান নবীন জিন্দাল প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নতুন ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্রামের মানুষের জীবিকা নির্বাহের জন্য ফলপ্রসূ হবে। পলিটেকনিক কলেজ ও মডেল কলেজের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি জানান, নলেজ কমিশনের রিপোর্ট বলছে, ২০২০ সালে ভারতের যুবসমাজ কর্মক্ষমতার প্রশ্নে আমেরিকা, ইয়োরোপ কিংবা জাপানকে পিছনে ফেলে দেবে। ওই সময় তরুণ প্রজন্মের সংখ্যা ওই সব দেশের তুলনায় ভারতে সবচেয়ে বেশি হবে। সেই সময় পৃথিবী জুড়ে কাজের লোকের চাহিদা তৈরি হবে। সে দিকে চেয়ে এখন থেকে পলিটেকনিক কিংবা মডেল কলেজের মধ্য দিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে তৈরি করতে হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.