পুকুরে ডুবে মৃত্যু হল তিন ভাইবোনের। মঙ্গলবার পৌনে ১০টা নাগাদ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে নানুরের রামকৃষ্ণপুর গড়াই পাড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্কুলে যাওয়ার জন্য ভাইবোন সোমনাথ (১২), মানবী গড়াই (১০) ও তাদের কাকার ছেলে মেঘনাদ (৭) স্থানীয় কলেণ্ডা পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ তারা না ফেরায় পরিবারের লোকজন ও পড়শিরা ওই পুকুরে তাদের খোঁজে যান। |
ওই সময় পুকুরে গিয়ে তাদের দেখা মেলেনি। বাড়ি ফিরে গিয়েছে ভেবে বাসিন্দারা ফিরে আসেন। কিন্তু বাড়িতেও তাদের দেখতে না পেয়ে গ্রামের অন্যত্র খোঁজ শুরু করেন। কোথাও তাদের হদিশ না পেয়ে বাসিন্দারা ওই পুকুরে নেমে খোঁজাখুঁজি করেন। তখন একে অন্যের প্যান্ট খামচে ধরে থাকা অবস্থায় তিন জনের দেহ একসঙ্গে উদ্ধার হয়। সোমনাথ স্থানীয় বাসাপাড়া ব্রাহ্মণখণ্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তাম শ্রেণির ছাত্র এবং বোন বোন মানবী বাসাপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। আর মেঘনাদ পড়ত তাকোড়া প্রাথমিক স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে। |
সোমনাথ-মানবী গৌতম গড়াই ও সুচিত্রাদেবীর দুই সন্তান। মেঘনাদ ভাই রাজু গড়াইয়ের ছোট ছেলে। ছেলেমেয়েকে হারিয়ে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না কেউই। দাদু শিশির গড়াই কোনও রকমে বলেন, “সোমনাথ, মানবী কিছু দিন ধরে ওই পুকুরে স্নান করতে যেত। মেঘনাদ এ দিনই প্রথম ওই পুকুরে যায়। ওই পুকুরে সব সময় কেউ না কেউ থাকত। কিন্তু এমন যে সর্বনাশ হবে ভাবিনি।”
তিন শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অধিকাংশ বাড়িতে মাঝ পথে থেমে গিয়েছে রান্না। গ্রামের বধূ শিখা গড়াই, পূর্ণিমা গড়াইরা বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েরাও ওদের সঙ্গে পড়ত। ওরা কেউ ভাত মুখে তুলতে পারবে না। তাই মাঝ পথে রান্না বন্ধ করে দিতে হয়েছে।” একই অভিব্যক্তি দিলীপ গড়াই, জলধর বাগদিদেরও। তাঁদের কথায়, “সান্ত্বনা জানানোর ভাষাটুকু পর্যন্ত নেই।” |