একেবারেই ভাল নেই সর্বজিৎ। দ্বিতীয় বার সিটি স্ক্যান করেও মস্তিষ্কের ক্ষত নিরাময়ের কোনও সম্ভাবনাই চোখে পড়ল না জিন্না হাসপাতালের চিকিৎসকদের। আলম ইকবাল মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল মেহমুদ সৌকতের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের এক মেডিক্যাল বোর্ড মঙ্গলবার জানিয়ে দিল, ওই ভারতীয় বন্দির শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে ক্রমশ। চিকিৎসায় সাড়া মিলছে না। ঘন ঘন পাল্টাতে হচ্ছে ওষুধ। সর্বজিৎকে সারিয়ে তুলতে পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে দেশের সেরা মস্তিষ্কবিদদের। |
মোমবাতি হাতে। মঙ্গলবার অমৃতসরে। ছবি: পিটিআই |
গত শুক্রবারের ঘটনা। কোট লাখপত জেলের অন্য বন্দিরা হঠাৎই চড়াও হন সর্বজিতের উপর। বেধরক মারধর করা হয় তাঁকে। মস্তিষ্কে একাধিক চোট নিয়ে জিন্না হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে ভর্তি হন সর্বজিৎ। গত তিন দিনে সর্বজিতের শারীরিক অবস্থা নিয়ে চলেছে নানা টানাপোড়েন। চিকিৎসকেরা তো এক সময় জানিয়েই দেন, সর্বজিৎ কোমায়। তাঁর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তা সত্ত্বেও চিকিৎসায় আশা রেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু মঙ্গলবার, দ্বিতীয় সিটি স্ক্যানের রিপোর্টেও উন্নতির কোনও চিহ্ন চোখে না পড়ায় চিকিৎসকেরা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সর্বজিতের মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ না করলেও, ক্রমাবনতি হচ্ছে তাঁর শারীরিক অবস্থার। মঙ্গলবারই জিন্না হাসপাতালে সর্বজিতের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ভারত-পাক বিচারবিভাগীয় কমিটির সদস্যেরা। ভারতীয় বন্দিরা ঠিক কী ভাবে থাকেন পাকিস্তানের জেলগুলিতে তা খতিয়ে দেখতেই এই মুহূর্তে পাকিস্তানে রয়েছে দুই সদস্যের ওই কমিটি। কোট লাখপত জেলের ৩৬ বন্দিকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন তাঁরা। আগামী বৃহস্পতিবার সর্বজিতের কাছে যাচ্ছেন ভারতীয় হাই কমিশনার শরৎ সভরওয়াল। পাক মাটিতে উপস্থিত ভারতীয় প্রতিনিধিরা সকলেই জানিয়েছেন, সর্বজিতের সঙ্গে দেখা করার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও রকম আপত্তি তুলছে না পাক প্রশাসন। সর্বজিৎকে উপযুক্ত সুরক্ষা দিতে না পারাও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে শো কজ নোটিস পাঠানো হয়েছে ওই জেলের সাত কর্মীর কাছে। জেল সূত্রের খবর, সর্বজিতের উপর আক্রমণের নির্দেশ এসেছিল ওই জেলেরই এক সুপারিন্টেনডেন্টের কাছ থেকে।
অন্য দিকে সর্বজিতের বোন দলবীর কৌর ওই হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেনডেন্টের কাছে দাবি জানান, ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে ডেকে পাঠানো হোক ভারতীয় চিকিৎসকদের। তাঁর পরিবার জানিয়েছে, ভারতীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়ার জন্য খুব শিগগিরই নিজেই দেশে ফিরছেন দলবীর।
|